বাংলাদেশের সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে ইতালি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যাওয়া ৩৯ বাংলাদেশীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এক সপ্তাহ সব ধরনের ফ্লাইট স্থগিত করেছে ইতালি সরকার। ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

ইতালির গণমাধ্যম ‘রোমা টুডে’ জানিয়েছে, সোমবার ঢাকা থেকে রোমগামী একটি ফ্লাইটে ২২৫ জন বিমানযাত্রীর মধ্যে ২১ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। বিমান বন্দরে এসব যাত্রীদের পরীক্ষা করার পর দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৬ জুন বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়। পরদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে রোমে ফিরে যান ২৫৯ জন প্রবাসী। এরপর গত দুই সপ্তাহে হাজারখানেক প্রবাসী বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ইতালি ফিরে গেছেন।

এর মধ্যে ইতালির রাজধানী রোম যে অঞ্চলে সেই লাৎসিও অঞ্চল কর্তৃপক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঢালাও করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ‘ক্লাস্টার’ সংক্রমণের ঘটনায় গত সপ্তাহে কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নেয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর প্রকাশ করেছে।

তবে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এসব যাত্রীদের শরীরে করোনার উপস্থিতি ওই অঞ্চলের দেশগুলোকে নতুন করে উদ্বেগে ফেলে দিয়েছে বলে জানান দেশটির কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনা ধরা পড়ার পর এটিকে ‘বোমার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ। 

ইতালির স্বাস্থ্য বিভাগের কাউন্সিলর লাজিও অ্যালেসিও ডি আমাতো বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমরা বড় ধরনের বোমা নিষ্ক্রিক করতে পেরেছি’। তবে এসব বিমান যাত্রীদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা ছবি  প্রকাশিত হবে কিনা সে বিষয়ে কিছুই বলেননি তিনি।

এ ঘটনার পর দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রর্বাতো স্পেরানাজা ঢাকা থেকে রোমগামী ফ্লাইট এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন। 

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইজি ডি মাইওো জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে ফ্লাইটের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত  গ্রহণ করা হবে। যাতে ইউরোপ ও সেনজেনভুক্ত দেশে আগতরা আরও সর্তকর্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন।

চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে ব্যাপকভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এসময় ইতালি থেকে অনেকে ভয়ে পরিবার নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরা এসব যাত্রীদের বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজ্জক্যাম্পে নেওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। সেসময় এসব যাত্রীদের বিমানবন্দরে পরীক্ষা করা হলেও এর মাস খানেক পর বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে করোনায় প্রতিদিন দেশে সাড়ে তিন হাজারের মতো নাগরিক আক্রান্ত হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই হাজারের বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন