মহাদেবপুর হাট

খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি নওগাঁ

নওগাঁর মহাদেবপুর হাটে খাজনা আদায়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এমদাদুল হক ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার ফিরোজ আহম্মেদের বিরুদ্ধে

সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার নির্ধারিত খাজনার বাইরেও অর্থ আদায় করেন তারা আবার আদায়কৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমাও দেন না এতে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি ১৪২৭ বঙ্গাব্দে মহাদেবপুর হাট ইজারা হয়নি এতে সরকারিভাবে খাজনা আদায় করা হচ্ছে সপ্তাহে দুইদিন শনি বুধবার হাট বসে তবে শুধু শনিবার গরু ছাগল বেচাকেনা হয় সরকারিভাবে যেখানে খাজনা আদায় নির্ধারণ করা আছে প্রতিটি গরু ৪০০ টাকা এবং ছাগল ১৫০ টাকা কিন্তু ২০ জুন শনিবার হাটে প্রতিটি গরু ৫০০-৫২০ টাকা এবং প্রতিটি ছাগল শতকরা ১০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হয় এছাড়া লিখনীতে প্রতিটি গরুতে ২০ টাকা এবং ছাগলে ১০ টাকা করে নেয়া হয় গত ২৭ জুন শনিবার হাটে প্রতিটি গরুতে ৫০০ টাকা খাজনা আদায় করা হলেও রসিদে ৪০০ টাকা এবং প্রতিটি ছাগলে ২০০ টাকা খাজনা আদায় করা হলেও রসিদে ১৫০ টাকা লেখা হয়েছে এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা

প্রতি হাটবারে প্রায় ১০ হাজার মণ ধান, ১৫০-২০০ মণ আলু বেচাকেনা হয় ধান বিক্রেতার কাছ থেকে টাকা মণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা মণ এবং আলু ক্রেতা বিক্রেতার কাছ থেকে ১০ টাকা মণ হিসেবে খাজনা নেয়া হয় এছাড়া অন্যান্য পণ্য থেকেও খাজনা আদায় করা হয়

ধানের আড়তের কর্মচারী সালাউদ্দিন বলেন, প্রতি হাটবারে প্রায় ১০ হাজার মণ ধান বেচাকেনা হয় যেখানে কৃষকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীররা প্রতি মণে টাকা খাজনা কেটে নেন এছাড়া ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তায় (দুই মণ) টাকা খাজনা দেন

কাঁচা তরকারির ব্যবসায়ী হবিবর বলেন, সপ্তাহে দুইদিন হাট বসে প্রতি হাটে ২০ টাকা করে তাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করা হয় তার মতো প্রায় ১০০ জনের কাছ থেকে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়

উপজেলার খাজুর গ্রামের ছাগল ক্রেতা বাবু বলেন, গত শনিবার হাটে হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে ছাগল কিনে ২০০ টাকা খাজনা দিতে হয়েছে কিন্তু রসিদে ১৫০ টাকা লেখা হয় এছাড়া বেলকুড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের দুটি ছাগলে ৪০০ টাকা এবং মান্দা থানার দুর্গাপুর গ্রামের আবুল হোসেনের দুটি ছাগলে ৩৫০ টাকা খাজনা দিতে হয়েছে

উপজেলার বাগডোব গ্রামের ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে ২০ জুন হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কেনা ছাগলে ২৫০ টাকা এবং তুড়ুক গ্রাম গ্রামের গরু ক্রেতা রিয়াজ উদ্দিনের কাছ থেকে ২২ হাজার ৮০০ টাকায় কেনা গরুতে ৫০০ টাকা খাজনা আদায় করা হয়

এসব অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার ফিরোজ আহম্মেদ কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তবে তিনি বলেন, এসব বিষয় ইউএনও স্যার ভালো জানেন

মহাদেবপুর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এবং খাজনা আদায়কারী মো. এমদাদুল হক বলেন, আমরা সরকারি কর্মচারী হওয়ায় কখনো এমন দায়িত্ব পালন করা হয়নি ২০ জুন হাটে খাজনা আদায়ে কিছুটা অসংগতি হওয়ায় পরে তা বন্ধ করা হয় তবে ২৭ জুন টাকাও বেশি নেয়া হয়নি এছাড়া খাজনা আদায়ে কোনো অনিয়ম করা হয়নি

মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, ২০ জুন হাটে একটু সমস্যা হয়েছিল এরপর থানা পুলিশের মাধ্যমে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি তবে ২৭ জুন হাটে সরকারি মূল্যের বাইরে কোনো খাজনা আদায় হয়নি এছাড়া রসিদের বাইরে কেউ যদি বাড়তি টাকা নিয়ে থাকে এমন কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন