দুই সপ্তাহ পর খুলল পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

বন্ধ করোনার নমুনা সংগ্রহ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি পাবনা

পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ দুজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ দুই সপ্তাহ বন্ধ ছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এতে করোনা মহামারীর সময় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতেও ভোগান্তি পোহাতে হয় অনেককে। অবশেষে গতকাল থেকে পুনরায় চালু করা হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। তবে বন্ধ রয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কমপ্লেক্সে পাঁচজন চিকিৎসক প্রতিদিন সেবা দেন। জুন হাসপাতালের এক অফিস সহকারীর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। পরদিন জুন পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের শরীরেও করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এর পর থেকে গত শনিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি।

ভুক্তভোগীরা জানান, কর্তৃপক্ষের অদূরর্শিতা অবহেলার কারণে দীর্ঘ ১৪ দিন বন্ধ ছিল। তারা চাইলেই অনেক আগে এটি চালু করা সম্ভব ছিল। এতে অনেক মানুষ ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেত।

এদিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় সবথেকে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে আসা মানুষ। অনেকেই নমুনা দিতে এসে হাসপাতাল বন্ধ দেখে চলে যান।

মালঞ্চী গ্রামের বাসিন্দা গফুর আলী জানান, পাবনা সদর হাসপাতালে নমুনা দিতে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দেয়ার জন্য ফেরত পাঠায়, সদরে এসে অফিস তালা বন্ধ দেখে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

জেলার আটটি উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর পাবনা সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল উপজেলা পরিদর্শন করেন। এরপর প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও উপজেলা পর্যায়ে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন করেননি। এমনকি তার কাছ থেকে সঠিক দিকনির্দেশনাও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জেলায়ে ১৭টি ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য ২৫৬টি কমিউনিটি সেন্টার রয়েছে। গ্রামের অসহায় মানুষ প্রথমে এসব সেন্টারে আসে সেবা নেয়ার জন্য। এসব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র কমিউনিটি সেন্টারে কোনো টেকনিশিয়ান না থাকায় কভিড রোগীদের নমুনা সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কভিড আক্রান্ত রোগীরা এসব সেন্টারে এসে সুস্থদের সংক্রমিত করছেন।

করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে পাবনার বাইবাস রোডে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ১০০ শয্যা ভাড়া নেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সেটা ছেড়ে দিয়ে পাবনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবুল হোসেন জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য পাবনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ১০০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত কভিড-১৯ ওয়ার্ডে ১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল।

জেলা কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল বণিক বার্তাকে বলেন, কভিড নিয়ন্ত্রণে নমুনা সংগ্রহসহ লোকজনকে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি অফিসে গিয়ে কথা বলার আহ্বান জানান। তার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, তিনি তার কক্ষ তালাবদ্ধ করে ভেতরে রয়েছেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি অসম্মতি জানান।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন