কভিড-১৯: ৫০০০ পরিবার পাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও ব্র্যাকের খাদ্য সহায়তা

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময়ে কর্মহীন হয়ে হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের পাঁচ হাজার পরিবারকে যৌথভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ব্র্যাক। উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান দুটি বলছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং অপচনশীল খাদ্য সামগ্রী প্যাকেটজাত করে লকডাউন প্রভাবিত এলাকার নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

দেশের অন্যতম প্রাচীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এই সংকটকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব পালন করছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেছেন, 'কভিড-১৯ এই প্রজন্মের চ্যালেঞ্জ, এখন সমাজের সকল স্তরের মানুষ এবং প্রতিষ্ঠানের একত্রিত হয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন। ব্যাংক হিসাবে আমাদের ব্র্যান্ড প্রতিশ্রুতি 'হেয়ার ফর গুড' অনুসারে তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং  দুর্যোগ পরবর্তী কালে অর্থনীতির গতি ফেরাতে আমার ২২০০ সহকর্মীর সাথে সমাজ এবং গ্রাহকদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ।'

এ বিষয়ে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘আমরা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সাথে যুক্ত হয়ে যৌথভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা নিয়ে লকডাউনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে পেরে আনন্দিত। খোলা মনে সহমর্মিতা এবং সহযোগিতাই পারবে সামাজিক ভয় আর শঙ্কা কাটিয়ে এই ভাইরাসে বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি যোগাতে। এই বিশেষ অবস্থাপন্ন মানুষগুলোর কাছে প্রয়োজনীয় সাহায্য পৌঁছানো এবং মনোবল বাড়ানোর সাথে সাথে তাদের সেলফ-রিপোর্টিং করতে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে উৎসাহিত করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করতে পারাই এই সংকট নিরসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি আরো জানান, কভিড-১৯ সংকট শুরু হওয়ার পরপরই ব্র্যাক তাদের ১ লাখেরও বেশি ফ্রন্টলাইন কর্মী, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকসহ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের বিভিন্ন প্রকল্পের চার কোটি ৩০ লাখ অংশগ্রহণকারীকে কভিড-১৯ এর প্রতিরোধ ও প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ব্র্যাক তার নিজস্ব তহবিল এবং অংশীদারদের সহায়তায় নিম্নআয়ের তিন লাখ পরিবারের কাছে জরুরি নগদ অর্থ সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। ব্র্যাকের ৪১টি প্রসূতি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৫৬৯ জন মহিলা মাতৃত্ব সংক্রান্ত সেবা, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা পেয়েছেন, যেগুলো কভিড-১৯ এর এই চলমান লকডাউন এর মধ্যেও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ব্র্যাক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে ওয়াক-ইন নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপনে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে (ডিজিএইচএস) সহায়তা করছে, এর অংশ হিসেবে নমুনা সংগ্রহের গতি আরও বৃদ্ধির লক্ষে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় কমপক্ষে ৫০টি নমুনা সংগ্রহ বুথ স্থাপন করা হবে। শিগগিরই সারাদেশে আরও ৫০টি বুথ স্থাপন করা হবে।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড এন্ড মার্কেটিং বিটোপী দাশ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার ইতিমধ্যে সামাজিক সুরক্ষা আয়তন বর্ধিত করাসহ কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অনেক প্রশংসনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং একই সঙ্গে বেসরকারি খাতও এগিয়ে এসেছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন অনেক বড়। দেশের বিভিন্ন কভিড-১৯ হটস্পটগুলোতে বসবাসরত অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের দৈনন্দিন জীবন বিঘ্নিত হয়েছে- এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাদের জরুরি সাহায্য পৌঁছাতে পারবো।’
 
এর আগেই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ঋণ পরিশোধের সময় বৃদ্ধি, ফি মওকুফ বা বাতিলকরণ এবং ঋণ সম্প্রসারণ সুবিধাসহ রিটেইল গ্রাহক এবং ব্যবসায়িকদের জন্য বিস্তৃত সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য পণ্য ও সেবা সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মহামারী দ্বারা আক্রান্তদের সহায়তা প্রদানে তহবিল গঠনের জন্য ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন ঘোষণা করেছে ব্যাংকটি।

(বিজ্ঞপ্তি)

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন