নীরব বাহকরা ছড়াচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস

বণিক বার্তা ডেস্ক

আপাতদৃষ্টিতে সুস্থদের মাধ্যমে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আরো তথ্যপ্রমাণ হাজির করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, কোনো ধরনের উপসর্গ নেই এমন মানুষ বাহক হিসেবে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে উচ্চঝুঁকি সৃষ্টি করছে। খবর জাপান টুডে।

সিঙ্গাপুরে একদল গবেষকের গবেষণা বলছে, নতুন করে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণের প্রায় ১০ শতাংশের উৎস হলো এমন মানুষ, যারা ভাইরাসটি নিজেদের শরীরে বহন করছে কিন্তু তাদের মধ্যে ফ্লু কিংবা অন্য কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে না। গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকানদের মধ্যে সংক্রমণ নিয়ে পূর্বধারণায় পরিবর্তন এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বর্তমানে সংস্থাটি নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে। এর মধ্য দিয়ে যারা কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ করছে না কিন্তু ভাইরাসে আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছে, তাদের নজরদারিতে আনা হচ্ছে। এর মানে হলো, কভিড-১৯-এর উপসর্গ থাকুক বা না থাকুক, যে কেউ নভেল করোনাভাইরাসের বাহক হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন গবেষণা বৈশ্বিক মহামারীটি রুখে দিতে কিংবা এর সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো জটিল করে তুলছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের গুরুত্ব।

বিভিন্ন দেশে নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণাকারী টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লরেন অ্যানসেল মায়ার্স বলেন, ভাইরাসটির সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। বিশেষ করে আপাতদৃষ্টে সুস্থ মনে হলেও পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

নতুন গবেষণা অনলাইনে প্রকাশ করেছে সিডিসি। এতে সিঙ্গাপুরে মধ্য জানুয়ারি থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত সংক্রমিত হওয়ার ২৪৩টি ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়। এর মধ্যে ১৫৭ জন রয়েছে যারা সম্প্রতি বাইরে কোথাও ভ্রমণ করেনি। দেখা গেছে, কভিড-১৯-এর তথাকথিত পূর্বলক্ষণযুক্তরা সাতটি ভিন্ন ভিন্ন গুচ্ছে সংক্রমণ ছড়ায়, স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের ক্ষেত্রে যা প্রায় শতাংশ।

এর মধ্যে একটি সংক্রমণের ঘটনা বেশ চিন্তা উদ্রেককারী। দেখা গেছে, ৫২ বছর বয়সী এক নারী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন স্থানীয় চার্চের একটি আসনে বসার কারণে। ওই আসনে তার আগে দুজন বিদেশী নাগরিক বসেছিলেন, যাদের মধ্যে কভিড-১৯-এর কোনো লক্ষণ ছিল না। কিন্তু ওই দুই বিদেশী পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মূলত চার্চের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজ থেকে অনুসন্ধানকারীদের হাতে তথ্য উঠে আসে।

এর আগের একটি গবেষণায় দেখা দেছে, নভেল করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল চীনে ১০ শতাংশ সংক্রমণ ঘটেছে এমন মানুষদের মাধ্যমে, যারা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলেও কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছিল না।

আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ কিন্তু ভাইরাস বহন করছে, এমন ব্যক্তিদের তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে প্রথম ভাগে রয়েছে প্রি-সিম্পটমেটিক বাহক। এরা সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়ার সময় লক্ষণ প্রকাশ না করলেও পরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে অ্যা-সিম্পটমেটিকরা। এরা এমন ব্যক্তি যাদের মধ্যে কখনই লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আর তৃতীয় ভাগে রয়েছে পোস্ট-সিম্পটমেটিক বাহক, যারা অসুস্থ হওয়ার পর সেরে উঠলেও ভাইরাস বহন করে চলে। সিঙ্গাপুর চীনের নতুন গবেষণায় মূলত

প্রি-সিম্পটমেটিকদের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন