নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের আগুনে পুড়ে বৃদ্ধা নিহত

দগ্ধ আরো ৭

বণিক বার্তা প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে নূরজাহান বেগম (৭০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়া এলাকায় বিদ্যু বিভাগের কর্মকর্তা ফারুক মিয়ার পাঁচতলা বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে এ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই পরিবারের আরো সাতজন দগ্ধ হন। হতাহতরা ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।

নিহত নূরজাহান বেগমের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায়। দগ্ধরা হলেন নূরজাহান বেগমের ছেলে কিরণ (৪৩), হীরণ (২৫), হিরণের স্ত্রী মুক্তা (২০), তাদের মেয়ে লিমা (৩), আবুল হোসেন (২২), কাওসার (১৬) ও আপন (১০)। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিসা দেয়া হচ্ছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক শুভ আহমেদ জানান, চুলা চালু থাকার কারণে গ্যাস নির্গত হয়ে রুম ভরে ছিল। আর সেই চুলায় আগুন ধরাতে গিয়ে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আটজন দগ্ধ হন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিকিসাধীন অবস্থায় নূরজাহান বেগম মারা যান। শ্বাসনালিসহ শরীর শতভাগ আগুনে পুড়ে যাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আরো দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের আইসিসিউতে রাখা হয়েছে।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. বিধান সরকার সাংবাদিকদের জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের আগুনে দগ্ধদের বেশির ভাগের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আবার অনেকের শরীরের ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের প্রত্যেকের অবস্থা সংকটাপন্ন।

নিহত নূরজাহানের মেয়ে লিপি আক্তার জানান, গতকাল ভোরে তার মা চুলা জ্বালানোর জন্য ম্যাচের কাঠি ধরানোর সঙ্গে সঙ্গে রান্নাঘরে আগুন লেগে যায়। এ সময় চিত্কার শুনে বাকিরা এগিয়ে এসে দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বাড়ির কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ থাকায় বাইরে থেকে কেউ ঘরে প্রবেশ করতে পারেনি। পরে আশপাশে লোকজন ফ্ল্যাটের জানালার গ্লাস ভেঙে পানি দিতে শুরু করে। খবর পেয়ে আদমজী ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে আটজন দগ্ধ হন। আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়।

নূরজাহান বেগমের জামাতা ইলিয়াছ মিয়া জানান, তাদের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায়। পরিবারটি ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে। আগুনে ঘরের চারটি রুমের খাট, আলমারি, ফ্যানসহ সব আবসাবপত্র পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, সারা রাত চুলা থেকে অল্প অল্প গ্যাস বের হয়ে পুরো বাড়িতে জমা হয়েছে। ভোরে ম্যাচের কাঠি ধরানোর সঙ্গে সঙ্গে পুরো ঘরে আগুন ধরে যায়। বিষয়টি আরো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন