মালিকের কাছে হারল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

স্কোরবোর্ডে সাকল্যে ১৪১ রান। এমন ছোট পুঁজি নিয়ে টি২০ ম্যাচ জেতার আশা করা যায় না। তবে হাল ছাড়েননি বোলাররা। মূলত বোলারদের জন্যই শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। এমনকি জয়ের সুযোগও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিপিএল অভিজ্ঞতাপুষ্ট শোয়েব মালিক চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেন বাংলাদেশের বোলারদের স্বপ্ন। ৪৫ বলের ইনিংসে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকলেন মালিক। ৩ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয়ে শুরু করল পাকিস্তান। তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজে স্বাগতিকরা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।

গতকাল লাহোরের গাদ্দাফি  স্টেডিয়ামে ম্যাচ জমিয়ে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। মাত্র ৩৫ রানের মধ্যেই ২ উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। বিদায় নেন অধিনায়ক বাবর আজম (০) ও মোহাম্মদ হাফিজ (১৭)। সফরকারী বোলারদের  শুরুর এ স্বস্তি কেড়ে নেন অভিজ্ঞ মালিক। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আহসান আলীকে (৩৬) সঙ্গী নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন। ৪৬ রান আসে জুটিতে। সঙ্গী বদল হলেও মালিক থাকেন অটল। ইফতিখার আহমেদ (১৬) ও ইমাদ ওয়াসিম (৮) ফিরে গেলেও জয়ের পথেই থাকে পাকিস্তান। তবে সফরকারী পেসার আল-আমিন শেষদিকে মৃত ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন।

শেষ ২ ওভারে ম্যাচ জিততে পাকিস্তানের প্রয়োজন পড়ে ৯ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ইমাদকে সরাসরি বোল্ড করেন আল-আমিন। ওই ওভারে দেন মোটে ৪ রান। সৌম্য সরকারের করা ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ মিড উইকেটে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন মোহাম্মদ মিঠুন। এ বল থেকে যোগ হয় ম্যাচজয়ী ২ রান।

এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন  বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারেননি দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ নাঈম। শ্লথ উইকেটে শুরু থেকেই দুজন ছিলেন সাবধানী। ১১ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকলেও খোলস ছেড়ে বেরোননি দুজনই। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ছিল মোটে ৬২। লিটন দাস, আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকারদের মতো হার্ড হিটারদের  রেখে তামিমের সঙ্গী হিসেবে নাঈমকে ইনিংস উদ্বোধন করতে পাঠানো কতটা যুক্তিযুক্ত, সে প্রশ্নটা থেকেই যায়। ১১তম ওভারের শেষ বলে আউট হন তামিম (৩৪ বলে ৩৯)। নাঈমের ইনিংসটি আরো মন্থর। ৪৩ রান করতে খেলেন ৪১ বল। শেষদিকে সেট না হয়ে দ্রুত রান রেট বাড়াতে গিয়ে উইকেট হারাতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশে অধিনায়ক হারের কারণ হিসেবে বলেছেন ১৫ রান কম থাকার কথা। ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ বলেন, আমাদের বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। উইকেটে শট খেলা কঠিন ছিল। আমাদের স্কোরবোর্ডে ১৫ রান কম ছিল। আর ফিল্ডিংও ভালো হয়নি।  বেশকিছু মিস ফিল্ড হয়েছে। রান আউটের সুযোগ হারিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচও হাতছাড়া হয়েছে। দুই ওপেনার ১০ ওভার ব্যাট করে মাত্র ৬২ রান সংগ্রহ করলে সেই দলের স্কোরবোর্ডের চেহারা যে মলিনই থাকবে, এটা অনুধাবন করার জন্য প্রয়োজন পড়ে না বিশেষজ্ঞ হওয়ার।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের কৃতিত্ব সতীর্থ বোলারদের দিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। তার কথায়, ‘এ জয়টা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, আমাদের বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছে। আর পিচ এমন শ্লথ থাকবে এটা আমাদের ভাবনার বাইরে ছিল। আমাদের বোলাররা খুবই পরিকল্পনামাফিক বোলিং করেছে। ম্যাচ জয়ের সব কৃতিত্বই আমাদের বোলারদের। জয়ের পরও উন্নতির জায়গা দেখছেন স্বাগতিক অধিনায়ক। বলেছেন, আগামী ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে আমাদের আরো ভালো ব্যাটিং করতে হবে।

শুরু থেকে রান আটকে রাখতে পারাটাকে জয়ের কারণ হিসেবে  মনে করছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়া শোয়েব মালিক। ম্যাচ শেষে বলেন, রান আটকে রাখতে পারাটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কৃতিত্ব আসলে আমাদের বোলারদের। নিজের ব্যাটিং নিয়ে মালিকের ভাষ্য, রান তাড়া করতে গেলে শুরুর দিকে সিঙ্গেল নিয়ে সেট হয়ে তারপর পাওয়ার হিটিংয়ে যেতে হয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪১/৫ (তামিম ৩৯, নাঈম ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১৯*; আফ্রিদি ১/২৩, হারিস ১/৩২, শাদাব ১/২৬)। পাকিস্তান: ১৯.৩ ওভারে ১৪২/৫ (আহসান ৩৬, মালিক ৫৮*; শফিউল ২/২৭, আল-আমিন ১/১৮, আমিনুল ১/২৮)। ফল: পাকিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: শোয়েব মালিক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন