অরক্ষিত পড়ে আছে মিরসরাইয়ের বধ্যভূমি ও গণকবর

বণিক বার্তা প্রতিনিধি মিরসরাই

দীর্ঘদিনেও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মুক্তিযুদ্ধকালীন বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। একাধিকবার চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে একাধিকবার এসব বধ্যভূমি ও গণকবরের তালিকা পাঠালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

একাধিক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের এপ্রিলে মিরসরাইয়ে রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। শুরু হয় ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন। বিভিন্ন স্থানে মানুষ মেরে একসঙ্গে ১৫-২০ জনকে কবর দেয়া হয়। পরে এসব স্থান বধ্যভূমি হিসেবে ঘোষণা করে সরকার।

মিরসরাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় করেরহাট ইউনিয়নের লোহারপুল, হিঙ্গুলী সেতু, অছিমিয়ারপুল, হিঙ্গুলী কোটের পাড়, ছুটিখাঁ দীঘির পাড়, মিরসরাই রেলস্টেশন রোডের লোহারপুলসহ সাতটি স্থানে নিরীহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়। উপজেলার অন্যতম বড় বধ্যভূমি হচ্ছে মিরসরাই রেলস্টেশন রোডের লোহারপুল এলাকা। এখানে একসঙ্গে শতাধিক লোককে কবর দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া ১৯৭২ সালের ৩ মে উপজেলার পশ্চিম হিঙ্গুলীতে একটি পুকুর থেকে ৮৩টি কঙ্কাল পাওয়া যায়। জানা গেছে, মুক্তিবাহিনী হিঙ্গুলীতে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত রেল সেতু ধ্বংস করলে পাকিস্তানি সেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে ছাগলনাইয়ার একটি গ্রাম থেকে ২৪০ লোককে ধরে এনে এখানে হত্যা করে।

এদিকে ২০১১ সালে রেলস্টেশন রোডের বধ্যভূমিটির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ। কিন্তু অযত্ন-অবহেলায় বর্তমানে এটি মাদকাসক্তদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সীমানা প্রাচীরের লোহার গ্রিল কেটে নিয়ে গেছে চোরের দল।

অন্যদিকে অছিমিয়ার পুলসংলগ্ন বধ্যভূমিটি চার লেন প্রকল্পে বিলীন হয়ে গেছে। চার লেনের কাজ শুরু করার সময় বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেন তত্কালীন উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন। কিন্তু পরে তা সংরক্ষণ করা হয়নি।

মিরসরাই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কবির আহম্মদ বলেন, মিরসরাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত সাতটি বধ্যভূমি সংরক্ষণের জন্য একাধিকবার জেলা পরিষদে তালিকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ছুটিখাঁ মসজিদ এলাকার বধ্যভূমিটি সংরক্ষণে বরাদ্দ দেয়া হলেও বাকিগুলোর বরাদ্দ এখনো পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন