বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়া রোধে সাধারণত কার্তিকেই বোরো ধান আবাদের প্রস্তুতি শুরু করেন সুনামগঞ্জের হাওড় এলাকার কৃষকরা। কিন্তু এবার অগ্রহায়ণেও হাওড়ের পানি না নামায় বিপাকে পড়েছেন তারা। পানি থাকার কারণে তারা বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। এতে এবার হাওড়াঞ্চলে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাত ও অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাওড় অধ্যুষিত সুনামগঞ্জে এবার বোরো মৌসুমে ২ লাখ ১৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যথাসময়ে আবাদ শুরু ও ফসলরক্ষা বাঁধ তৈরি না হলে পাহাড়ি ঢলে ধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে হাওড়াঞ্চলে আগেভাগেই বোরো আবাদ শুরু হয়। সাধারণত এ জাতের ধান আবাদের প্রস্তুতি শুরু হয় কার্তিকে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বোরো আবাদ পিছিয়ে যাওয়ায় ফলন পেতেও দেরি হবে। এতে ধান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দিরাইয়ের কালিয়াকোটা, বরাম, সদরের দেখার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার করচার, দোয়ারাবাজার উপজেলার কানলার, জামালগঞ্জে পাগনার, তাহিরপুরের শনির, মাটিয়ান ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরির ছায়ার হাওড়ে এখনো পানি নামেনি। এমনকি কোথাও কোথাও পাড় ভেসে ওঠেনি। হাওড়সংলগ্ন নদীগুলোয় পানির উচ্চতাও বেশি। এ কারণে মূলত পানি নামছে না। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষকরা। এ কারণে তারা বীজতলা তৈরিরও উদ্যোগ নেননি।
কৃষকরা জানান, পানি নিষ্কাশন বিলম্বিত হলে চাষাবাদ বিলম্বিত হবে। এতে শেষ পর্যায়ে গিয়ে বন্যায় ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কানলার হাওড়ের কৃষক আব্দুল মালিক বলেন, অন্য বছর কার্তিক মাসের মধ্যেই হাওড়ে বোরো আবাদের বীজতলা তৈরির কাজ শেষ হয়। না পারতে অগ্রহায়ণের শুরুর দিকেই বীজ বপন শেষ করে চারা রোপণের প্রস্তুতি নিতে হয়। কিন্তু এবার ঘটেছে বিপরীত। হাওড়ের পানি নামতে দেরি হওয়ায় বীজতলা তৈরিও পিছিয়ে গেছে।
পাগনার হাওড় পাড়ের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, জমিতে পানি থাকায় এখনো গরু বাঁধের উপরে রাখতে হচ্ছে। বীজতলাও তৈরি করিনি।
করচার হাওড়ের কৃষক রাসেল আহমদ বলেন, কার্তিকের মধ্যেই বীজতলায় বীজ বপন করা জরুরি। না হয় সময়মতো ধান পাকবে না। ধান বন্যাসহ নানাভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ 
