নারায়ণগঞ্জে ধসে পড়া সেই ভবন থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের ১ নং বাবুরাইল তাতিপাড়া এলাকায় ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় আটকে পড়া শিশু ইফতেখার আলম ওয়াজেদের (১৩) মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এসময় নিহতের স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। উৎসুক জনতা ও নিহতের স্বজনরা শিশুটিকে একনজর দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে।

আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড ডিফেন্স ডিভিশনের বিভাগের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, দুপুর ২টার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের কর্মীরা ভবন কেটে নীচতলার ফ্লোরের পৌঁছালে মৃতদেহ দেখতে পান। নিহত ওয়াজেদের মৃতদেহটি ধসে পড়া ভবনের একটি বিমের নিচে আটকা ছিল। প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে দেয়াল বিম কেটে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

তিনি জানান, গত ৩ নভেম্বর বাবুরাইল তাতিপাড়া এলাকার চারতলা ভবনটি ধসে পড়ার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। প্রায় ৪৮ ঘণ্টার টানা তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার দুপুর ২টায় তাকে উদ্ধার করে। 

ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান আসলাম হোসেন বলেন, নিহত শিশুর মৃতদেহ উদ্ধারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সুরতহাল সম্পন্ন করে এবং পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পোস্টমর্টেম ছাড়াই নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় নিহত সোয়াইবের মামা রনি বাদী হয়ে ভবনের পাঁচ মালিকের নাম উদ্ধার করে উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘মামলায় অবহেলাজনিত কারণ ও বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করা অভিযোগ আনা হয়েছে।’

গত ৩ নভেম্বর বিকেলে বাবুরাইল তাতিপাড়া এলাকায় চারতলা ভবনটি ধসে পড়ে। ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। প্রথমদিনই ভবনে আটকা পড়া ছয়জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে শোয়ায়েব নামের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাকি পাঁচজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক জানান, নিহত শিশু ইফতেখার আলম ওয়াজেদের মৃতদেহ দাফন কাফনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতদের ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। ভবন ধসে পড়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর জেলা প্রশাসক যে নির্দেশনা দেবেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

তিনি জানান, ধসেপড়া ভবন অনুসন্ধানে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর অপসারণ করা হবে। এছাড়া পাশে খাল দখল করে যেসব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো সিলগালা করে দেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন