আমেরিকান অটোমোবাইল কোম্পানি জিপের সঙ্গে স্পন্সরশিপ চুক্তি থেকে বর্ধিত আয় ও অন্যান্য খাত থেকে ২৬০ মিলিয়ন পাউন্ড আয়ের পরিকল্পনা জুভেন্টাসের। পর্যাপ্ত তহবিল পেলেই ‘পরবর্তী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো’কে কেনার মিশনে নামবে ‘তুরিনের বুড়ি’রা। তবে পরিকল্পনা এখনই শুরু করে দিয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা।
গত বছর গ্রীষ্মের দলবদলে রিয়াল
মাদ্রিদ থেকে ৯৯ মিলিয়ন পাউন্ডে রোনালদোকে কিনে ফুটবল বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়
জুভেন্টাস। অনেকে ধারণাই করতে পারেননি যে রোনালদো রিয়াল ছাড়বেন কিংবা তাকে কেনার
সামর্থ্য রাখে তুরিন জায়ান্টরা। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে সেই কাজটিই করেছে টানা
আটবারের লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী রোনালদো
অনেকের চোখে ফুটবল তো বটেই,
সব ধরনের খেলাধুলায় অন্যতম সেরা ‘মার্কেটেবল’ খেলোয়াড়।
অর্থাৎ তার বাজারমূল্য অনেক বেশি। ইনস্টাগ্রাম থেকে গত এক বছরে সব অ্যাথলিটের চেয়ে
বেশি আয় করে তা প্রমাণও করেছেন রোনালদো। তাকে কেনার মধ্য দিয়ে এরই মধ্যে ৫১ মিলিয়ন
বাড়তি রাজস্ব আহরণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে জুভেন্টাসের এবং পর্তুগিজ সুপারস্টারের
কারণেই বাড়তি ৪ কোটি দর্শক পেয়েছে ক্লাবটি।
জুভেন্টাস শেয়ারহোল্ডার
অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান পাওলো আইকার্দি জানান, ৩৪ বছর বয়সী ফুটবলারকে কেনার মধ্য
দিয়ে ক্লাবের একটি চক্রের অবসান ঘটেছে। এএসকে তিনি বলেন, ‘আট
বছর আগে আমরা যে পরিকল্পনা করেছিলাম,
রোনালদো তার সমাপ্তিরেখা এঁকে দিয়েছেন। তখন
মিরকো ভুচিনিচ ছিলেন আমাদের তারকা খেলোয়াড়। ভুচিনিচ থেকে রোনালদো পর্যন্ত বেশ
কয়েকটি ধাপ ছিল: কার্লোস তেভেজ, সামি খেদিরা—এসব খেলোয়াড় বলে দিচ্ছিল বড় তারকা নিয়ে আসছে জুভেন্টাস। যখন এক নম্বর
খেলোয়াড় রোনালদো এসে গেলেন,
তখন সবার ধারণা হলো, এখন
রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়েও জুভেন্টাসকে বেছে নিতে
পারেন একজন খেলোয়াড়। আজ সবই সম্ভব এবং ম্যাথিস ডি লিটকে (ডাচ
ডিফেন্ডার) কেনার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিতও। আমাদের পরের লক্ষ্য হলো নতুন
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে কেনা,
তবে অবশ্যই সে তরুণ হবে।’
‘বিয়ানকোনেরি’খ্যাত ক্লাবটির যারা শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন, তাদের
বার্ষিক সাধারণ সভার দিন এসব কথা বলেন চেয়ারম্যান আইকার্দি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন
জুভেন্টাস চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া অ্যাগনেল্লিও। পরেরজনই জানালেন কীভাবে তারা আগামীর
জন্য ২৬০ মিলিয়ন পাউন্ড তহবিল জোগাড় করবেন। জিপের সঙ্গে নতুন চুক্তির ব্যাপারে
পর্তুগাল জাতীয় দলের অধিনায়ক সিরি-এ চ্যাম্পিয়নদের সাহায্য করেন। নতুন চুক্তির ব্যাপারে জিপ এরই মধ্যে
রাজি হয়েছে এবং ২০১২ সালে স্বাক্ষরিত সর্বশেষ চুক্তির দ্বিগুণের বেশি অর্থ দিতে
রাজি। আগের চুক্তিতে তারা জুভেন্টাসকে বছরে দিয়ে এসেছে ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড করে।
জুভেন্টাসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বছরে
৩৬ মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যাপারে জিপের সঙ্গে আলোচনা সফল হয়েছে ক্লাবটির। তার মানে, আগের
চেয়ে বছরে ২১ মিলিয়ন পাউন্ড বেশি পাবে
‘তুরিনের বুড়ি’রা। জুভেন্টাসের বিবৃতিতে বলা হয়: ‘ঘোষণা
করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুর্দান্ত মাঠের পারফরম্যান্স এবং বিশ্বব্যাপী
জুভেন্টাস ব্র্যান্ডের অধিকতর জনপ্রিয়তার কারণে এফসিএ ইতালি (জিপ) দুই
মৌসুমের (২০১৯-২০ ও ২০২০-২১) জন্য বার্ষিক ফি ২৫ মিলিয়ন ইউরো (২১
মিলিয়ন পাউন্ড) বাড়াতে সম্মত হয়েছে এবং এ ব্যাপারে চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। ২০১২
সালের এপ্রিলে স্বাক্ষরিত চুক্তির অন্য শর্তাবলি ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত
অপরিবর্তিত থাকবে।’
দুই মৌসুমে শার্ট স্পন্সরশিপ থেকে ৭২
মিলিয়ন পাউন্ড এলে তা জুভেন্টাসকে ২৬০ মিলিয়ন তহবিল গঠনে সাহায্য করবে এবং তারা
নতুন রোনালদোকে কেনার কাজেও এগিয়ে যেতে পারবে। দুদিন আগে ইতালির গাজেত্তা দেলো
স্পোর্ত জানায়, প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের
(পিএসজি)
ফরাসি সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপ্পেকে দলভুক্ত
করার স্বপ্ন দেখছে জুভেন্টাস। আবার উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড এডিনসন কাভানিকেও নিয়ে নাকি
ভাবছে সিরি-এ চ্যাম্পিয়নরা।
জুভেন্টাস নতুন রোনালদোকে কেনার
পরিকল্পনা করলেও আসল রোনালদো কিন্তু এখনই অবসর নেয়ার কথা ভাবছেন না। সম্প্রতি
ক্যারিয়ারের ‘৭০০তম’ গোল করা এ খেলোয়াড় প্রতি ম্যাচেই প্রমাণ করে যাচ্ছেন, ৩৪
বছর বয়সেও তিনি সমান ক্ষুরধার। দ্য সান