বাজার অর্থনীতি ও বিশ্বায়নের ফল

ড. আর এম দেবনাথ

গত মাসের মাঝামাঝির দিকে একটি দৈনিকে রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের ওপর একটা মন্তব্য পড়লাম। মন্তব্যটি সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য তোফায়েল আহমেদের। তিনি একটি শোকসভায় বলেন, ‘রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। এ কথার অর্থ কী? রাজনীতি তাহলে কার হাতে? ব্যবসায়ীদের হাতে, সামরিক-বেসামরিক আমলাদের হাতে? নাকি বুদ্ধিজীবী, জ্ঞানী ও গুণীদের হাতে? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হলেরাজনীতির সংজ্ঞা দরকার। এ সংজ্ঞা হয়তো নানাজন নানাভাবে দিতে পারেন। আলোচনার খাতিরে ধরে নিই, যারা নির্বাচন করেন, জেতেন অথবা হারেন, যারা সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক দল করেন, দেশের কথা ভাবেন, দেশের মানুষের ভালো-মন্দ নিয়ে কথা বলেন, সর্বোপরি যারা সরকার চালান তারাই রাজনীতিবিদ। এ নিরিখে বিচার করলে সর্বাগ্রে চলে আসেসংসদের কথা। সংসদ সদস্যরাই নির্বাচিত এবং দেশ পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত এ সংসদ সদস্যরা কি ব্যবসায়ী, আমলা, কৃষক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী অথবা জ্ঞানী-গুণীজন? এসব প্রশ্নের উত্তর মাঝে মাঝে আমরা খবরের কাগজে পাই। দেশের নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠান, জরিপ প্রতিষ্ঠান বলছে যে আমাদের সংসদের সিংহভাগ সদস্য ব্যবসায়ী। অন্তত তাদেরহলফনামায় তা-ই বলা আছে। এমনিতে জনমনেও একই ধারণা বিরাজমান। অথচ এ অবস্থা আগে ছিল না। আগে স্কুলমাস্টার, উকিল, মোক্তার, সমাজসেবী, গণ্যমান্য ব্যক্তিরাই সংসদে আসতেন। ধীরে ধীরে অর্থনীতি ও সমাজের পরিবর্তনের পথ ধরে, বাজার অর্থনীতির কল্যাণে সংসদ ও রাজনীতি চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের হাতে। সমাজ অর্থনীতি, নীতিনির্ধারণ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভূত-ভবিষ্যৎ ইত্যাদিতে তাদের মতামতই এখন অগ্রগণ্য। এর একটা বড় প্রমাণ ও পথনির্দেশ আমরা পাই বর্তমান মন্ত্রিসভার গঠনশৈলী থেকেও। দেখা যাচ্ছে বর্তমান মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা হচ্ছেন দেশের প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী দেশের বিখ্যাত ব্যবসায়ী। তার ওপর আছেন মন্ত্রীর পদমর্যাদার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা। এরা ছাড়াও মাঝারি ও বড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই আছেন মন্ত্রিসভায়। যেমন খাদ্যমন্ত্রী। শুনেছি তিনি একজন বড় ব্যবসায়ী, তাও চালের ব্যবসায়ী। বলা বাহুল্য, এটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরাট একটা পরিবর্তন। বলা যায়, আগামী দিনের একটা পূর্বাভাস! এবারে সূচিত এ পরিবর্তনের সঙ্গে আগামী দিনের উন্নয়ন, বিনিয়োগ, জাতীয় আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস, বৈষম্য দূরীকরণ, জলবায়ু রক্ষা, কর্মসংস্থান, বেকারত্ব হ্রাস, জাতীয় মূল্যবোধ ইত্যাদির সম্পর্ক কী হতে পারে? আগামী দিনে কি ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা অন্যান্য দেশের মতো রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজের পুরো নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নিতে পারেন? তারা কি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সূত্র বের করতে পারবেন? এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার, বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু যেমন পরিবর্তিত হচ্ছে, তেমনি আমাদের দেশেও অন্যদের মতো রাজনীতি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ধীরে ধীরে বিবর্তিত হচ্ছে।

একসময় ধর্মীয় গুরুরাই প্রকৃতপক্ষে দেশের শাসক ছিলেন। ক্ষত্রিয় বা শাসকরা রাজা-সম্রাট থাকতেন ঠিকই কিন্তু বিধিবিধান আসত সব ধর্মীয় গুরুদের কাছ থেকে। তারপর আমরা দেখলাম ক্ষমতা চলে যাচ্ছে সরাসরি স্বৈরশাসক বা সামরিক শাসকদের হাতে। তারাই হয়ে পড়েন শাসক-প্রশাসক। গণতন্ত্র-নির্বাচন যেমন আগেও ছিল না, এখনো নেই। পৃথিবীর দেশে দেশে স্বৈরশাসক, ঔপনিবেশিক শাসক, সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে একসময় জনমত গড়ে ওঠে।বামপন্থার জন্ম হয়। জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে। এর ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসে দেশে দেশে জাতীয়তাবাদী নেতৃত্ব। তাদের দল ছিল, অনুসারী ছিল, আদর্শ ছিল, কর্মী ছিল। গত শতাব্দীর শেষ পর্যন্তও এর উপস্থিতি আমরা লক্ষ করেছি। নেতৃত্বের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী বাজার অর্থনীতি ও উদারীকরণের নীতি অনুসৃত হতে শুরু করলে দেশে দেশে ব্যবসায়ীদের অনুকূলে বিরাট পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এক দেশের শ্রমিক অন্য দেশে যান। মানুষের আয় বাড়ে। উন্নয়নশীল দেশের রফতানি বাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে আমদানি। ভোগ বাড়ে। বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধিতে জোয়ার আসে। দেশে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়ে। কোটি কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার উপরে ওঠে। উন্নত দেশগুলো বাজার অর্থনীতির পথে পৃথিবীর দেশগুলোকে অনেক সুবিধাই দেয়।আদর্শ পড়ে যায় পেছনে। আমদানি-রফতানি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রেমিট্যান্স, প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, কর্মস্থল, প্রযুক্তি, শিল্পায়ন ইত্যাদি চলে আসে সামনে। ইত্যবসরে গড়ে ওঠে বিরাট এক মধ্যবিত্ত শ্রেণী। এ প্রক্রিয়া বলা বাহুল্য ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া, লাভ-মুনাফার প্রক্রিয়া, ধন-সম্পদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া। এসব ব্যবসায়ীদের কাজ। এতে চিরায়ত মূল্যবোধের কোনো স্থান নেই। এখানে টাকা রোজগার এবং ভোগই জীবনের লক্ষ্য। আইন-নিয়মনীতি মানলে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়া যায় না। অনুপার্জিত সম্পদ ছাড়া সম্পদশালী হওয়া যায় না। এমন একটা পরিস্থিতিতে পৃথিবীর অনেক দেশেই মধ্যবিত্তের সঙ্গে সঙ্গেই গড়ে উঠেছে বিরাট এক ব্যবসায়ী শ্রেণী। আমাদের দেশেও তা-ই। আমাদের অঞ্চলের বাঙালিদের ব্যবসায়িক কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। বৃহত্তর সমাজেও ব্যবসায়ী বলতে কোনো সম্প্রদায় বা শ্রেণী ছিল না। কিন্তু বিজাতীয়করণ, বেসরকারীকরণ, ব্যাংক ফিন্যান্স, বাজার অর্থনীতির অনুশাসন, সরকারি মদদ, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অনুকূল নীতিমালার কারণে দেশে গড়ে উঠেছে বিশাল ব্যবসায়ী শ্রেণী। আমাদের ব্যবসায়ীরাকোটিতে আর কোনো হিসাব করেন না। মিলিয়নেও (১০ লাখ) না। হিসাব এখন বিলিয়নে (শতকোটি) ব্যবসায়িক ও শিল্পশক্তির কারণে টাকার মান প্রতিবেশী ভারত এবং বর্তমান পাকিস্তানের রুপির চেয়ে অনেক বেশি। দেশে কয়েক হাজার কোম্পানি আছে। ৪০০-৫০০ কোম্পানি স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত। শত শতগ্রুপ অব কোম্পানিজ দেশে এখন বিদ্যমান। এরা প্রথমে টাকা কামায় পরিত্যক্ত সম্পত্তি দিয়ে এবং জনশক্তি রফতানি করে। অনেকেই টাকা বানায় পরে তৈরি পোশাক রফতানি করে। আমদানি ও রফতানি ব্যবসায়আন্ডার ইনভয়েসিংওভার ইনভয়েসিং করে অনেকেই প্রচুর পুঁজির মালিক হন। উদারব্যাংক ফিন্যান্স’-এর বদৌলতে তারা গড়ে তুলেছেন বিশাল বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। ৫-৭-১০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকঋণগ্রহীতা ব্যবসায়ীর সংখ্যা এক-দুজন নয়। ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে ব্যাংক করার লোক শত শত। ৫-৭-১০ হাজার কোটি টাকার ইকোনমিক হোম বানানো লোক অগণিত। বিশাল বিশাল বেসরকারি শিল্প উদ্যোগে দেশ ভর্তি।

অনেক শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী দেশের বাইরেও শিল্প গড়ে তুলেছেন, ব্যবসা করছেন। এক কথায়, গত ২০-৩০ বছরে বাজার অর্থনীতির কল্যাণে দেশে গড়ে উঠেছে বিশাল প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী শ্রেণী। তারা এখন সরকারের পৃষ্ঠপোষক। আবার সরকারও তাদের পৃষ্ঠপোষক।অ্যাকসেস টু পাওয়ার’-এর সুবিধা নিয়ে বিনা মেধায় একশ্রেণীর ব্যবসায়ী অঢেল অর্থসম্পদ করেছেন। শুধু তারা নয়, মাঝারি ও ছোটরাও প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। রাজনীতির আশ্রিত এসব ব্যবসায়ী হাজার হাজার। সম্প্রতিক্যাসিনো ব্যবসার বিরুদ্ধে যে অভিযান চালানো হয়েছে, তার খবরাখবর পাঠ করে পরিষ্কার বোঝা যায় কিছু যুবকের হাতে কত টাকার সহায়-সম্পত্তি। আবার পাচারের ঘটনা পড়লেও বোঝা যায় দেশে অর্থসম্পদ কীভাবে গড়ে উঠছে।এভরি ফার্স্ট ডলার ইজ ডার্টি ডলার’—এ কথা মনে রাখলে একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর এ উত্থানের কারণ বোঝা যায়। পাশাপাশি এও সত্য, বর্তমানে যে ৮-৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটছে, হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, তার মূলেও এই নব উত্থিত ব্যবসায়ী শ্রেণীই। এরাই তৈরি পোশাক শিল্প, বড় বড় শিল্প, ব্যাংক-বীমা-লিজিং কোম্পানির মালিক, এরাই আমদানি-রফতানির নিয়ন্ত্রক। এরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছেনচাঁদা প্রদান নয়, সরাসরিরাজনীতি করতে হবে; রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে অতি দ্রুত ধনী হওয়ার জন্য। তাদের এ কর্মকাণ্ডে তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ তারা করেন। একেকটা জাতীয় নির্বাচনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। বহু প্রার্থী ২০-৩০-৪০ কোটি টাকা বা তারও বেশি পরিমাণ টাকা নির্বাচনে ব্যয় করেন। ফলে সাধারণ লোক, মধ্যবিত্ত এমনকি একজন উচ্চবিত্তও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চিন্তা করতে পারেন না। পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াই নব উত্থিত ব্যবসায়ী-শিল্পপতির নিয়ন্ত্রণে।

আমি নিশ্চিত এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই রাজনীতি ও অর্থনীতির পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে ব্যবসায়ীদের হাতে। হয়তো তাদেরই একজন আগামী দিনে দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হবেন। এমন একটা পরিস্থিতি হলে অর্থনীতির অবস্থা কী হতে পারে? এ সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই। তবে বোঝাই যায় ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের একটা সুবিধা আছে। তারা সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হন না। দেশে চলমান কোম্পানির মতো যেখানেইলাভ বা মুনাফা’, সেখানেই তারা। যেখানেই ঝুঁকি সেখানেই তারা। নিয়ম-কানুন মেনে ও ভেঙে তারা এগিয়ে যান। আন্তঃদেশীয় সম্পর্ক উন্নয়নেও তারা অগ্রণী হতে রাজি, যদি তারা লাভের মুখ দেখেন।দেশপ্রেম তাদের কাছে বড় বিষয় নয়। বাস্তবতা বড় বিষয়। যা করণীয় তা তারা করেন। চিরায়ত রাজনীতিবিদরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন। সিদ্ধান্ত নিতে বারবার ভাবেন। অনেক সময় শিল্প ও বাণিজ্য সম্পর্কেও তাদের ধারণা থাকে কম বা অপ্রতুল। অনেক সময় অস্বচ্ছ। অথচ বিশ্বায়ন, বাজার অর্থনীতির আমলে বড় বড় সিদ্ধান্ত নিতে হয়। হাজার হাজার কোটি টাকার সিদ্ধান্ত। এসব সিদ্ধান্ত নিতেকলিজা লাগে। ব্যবসায়ীদের তা আছে। তবে মুশকিল অন্যত্র। অনেক ব্যবসায়ীর লোভ বড় বেশি। মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কয়েক মাস আগেরাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার ২০১৭ বিতরণকালে একটি প্রণিধানযোগ্য পরামর্শ দিয়েছেন। এ খবরের শিরোনাম ছিল—‘বিবেকহীন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। ব্যবসাকে একটি মহৎপেশা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইসলামেও ব্যবসাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু অসৎ ও অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে আজ সৎ ও ভালো ব্যবসায়ীদের সুনামও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ জায়গাটিতেই সমস্যা।লোভ বালাভ ছাড়া বাজার অর্থনীতি হয় না। লোভই প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এর সীমা থাকতে হয়, নইলে সমাজ ভেঙে পড়ে। সীমার বিষয়টি আবার তাদের বিবেকের ওপরও ছেড়ে দিলে হয় না। সীমাটা টেনে দিতে হয় রাষ্ট্রকে। আইন অনুসরণ, মেধা, শ্রম, প্রতিযোগিতা এবং সমভাবে প্রযোজ্য পরিবেশে কেউ অর্থসম্পদ করলে তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। এ জায়গায় বাঙালিরঅ্যান্টি-মানি অবস্থান ত্যাগ করতে হবে। অর্থাৎ সমাজ যেমন ব্যবসা সম্পর্কে তার ধারণা বদলাবে, তেমনি সরকার আইন-বিধি করে দেবে এবং সর্বোপরি ব্যবসায়ীরা আইনের অধীনে কাজ করবেন। বর্তমানে এসব অধিকাংশ ক্ষেত্রে হচ্ছে না বলেই নানা ধরনের আপত্তি উঠছে। মানুষ আশঙ্কা প্রকাশ করছে। ধারণার জন্ম হয়েছে যে রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। দৃশ্যত বিষয়টি তা-ই। কিন্তু আবার দেখা যাচ্ছে রাজনীতিবিদরাই ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ। কেউ কেউ ক্ষমতায় গিয়ে অথবা ক্ষমতা ব্যবহার করে ব্যবসায়ী হচ্ছেন আবার বড় টাকার মালিক হয়ে কোনো ক্ষমতাসীন দলে ঢুকে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ একাকার। আলাদা করার উপায় নেই। এ বাস্তবতায় ভবিষ্যতে কী হবে? আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ব্যবসায়ীদের অনূকূলে। বছরে একবারদাভোসে দুনিয়ার বড় বড় ব্যবসায়ী বসেন এবং তারা ঠিক করেন আগামীতে বিশ্বে কী ঘটবে এবং ঘটা উচিত। সেখানে বড় বড় আন্তর্জাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে রাষ্ট্রনায়ক ও সরকারপ্রধানদের। আবার দেখা যায় সরকারপ্রধানরাও বিদেশে যান এক বিমানভর্তি ব্যবসায়ী নিয়ে, মিডিয়া সেখানে দোসর। সেখানে জ্ঞানী-গুণীর কোনো স্থান নেই। আদর্শের কোনো বিষয় নেই। কথা শুধু চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, উন্নয়ন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন