বুড়িমারী স্থলবন্দর

বিদ্যুৎ সমস্যায় ভোগান্তি ব্যবসায়ীদের

বণিক বার্তা প্রতিনিধি লালমনিরহাট

 বুড়িমারী স্থলবন্দরে গত এক দশকে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে যদিও বাড়েনি বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বিশেষত বিদ্যুতের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যবসায়ীদের

বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর শুল্কস্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে চালুর প্রায় এক দশক পেরিয়ে গেলেও স্থলবন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্টদের জন্য কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি বরং অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা-কর্মচারী স্থানীয় জনগণ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দিনে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টাই বিদ্যুত্হীন থাকে বুড়িমারী স্থলবন্দর সামান্য ঝড় কিংবা বৃষ্টি হলে এক থেকে দুইদিন, কখনো কখনো এক সপ্তাহও বিদ্যুতের দেখা মেলে না এখানে

বুড়িমারী স্থলবন্দরে আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার অ্যাসাইকুডার মাধ্যমে আমদানি-রফতানির যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয় প্রায়ই বিদ্যুৎ না থাকার কারণে শুল্কায়ন পণ্য খালাসের জন্য ব্যবসায়ী কর্মকর্তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় এমনকি কখনো কখনো বাধ্য হয়ে রাতের বেলায়ও কাজ করতে হয় তাদের

বিষয়টির সমাধানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন বিদ্যুৎ বিভাগ সরকারের উচ্চ পর্যায়সহ জাতীয় সংসদে বিষয়টি একাধিকবার তুলে ধরেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়াসহ যোগাযোগ করেন তার পরও সুরাহা হয়নি বিষয়টির

এছাড়া ২০১৬ সালের অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তত্কালীন চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে স্থানীয় ব্যবসায়ী-কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য আশ্বাস দেন কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি বরং বিদ্যুতের চরম ভোগান্তি এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় প্রকট আকার ধারণ করেছে

বিদ্যুতের এমন সমস্যা থাকার পরও বুড়িমারী স্থলবন্দর রাজস্ব আহরণে ভালো করছে প্রসঙ্গে বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার আব্দুস ছালাম বণিক বার্তাকে বলেন, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের গত তিন মাসে (জুলাই, আগস্ট সেপ্টেম্বর) কোটি লাখ ৪১ হাজার টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ১৫ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা রাজস্ব আহরণ সম্ভব হয়েছে এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৬৮ কোটি ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকার রাজস্ব আহরণ হয় তবে লক্ষ্য পূরণ হয়নি গত অর্থবছর (২০১৮-১৯) ওই সময় ৯৪ কোটি ৪১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আহরণ হয় ৭৬ কোটি ৫৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা 

তিনি আরো বলেন, এখানে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে সার্ভার বিপর্যয় ঘটে নিয়মিত এতে রাজস্ব আহরণে ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হলে বন্দরে আরো বেশি রাজস্ব আহরণ হবে বলে তিনি মনে করেন

বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আমদানিকারক ব্যবসায়ী এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য সায়েদুজ্জামান সাঈদ বলেন, অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা স্থলবন্দর ব্যবহার করতে আগ্রহী হন না পর্যাপ্ত আবাসিক ব্যবস্থা থাকলেও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে বড় বড় ব্যবসায়ী যেমন আসছেন না, তেমনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও স্বতঃস্ফূর্ত কাজে অনীহা রয়েছে

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী তাহাজুল ইসলাম মিঠু বণিক বার্তাকে বলেন, দূরত্বের কথা বলে বিদ্যুৎ বিভাগ দায়িত্ব পালন করছে না ফলে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে গণঅসন্তোষ রয়েছে

রফতানিকারক ব্যবসায়ী বন্ধু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচণ্ড সমস্যায় আছি বন্দর থেকে রাজস্ব এলেও বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে কোন??

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন