নওয়াপাড়া নৌবন্দর

আমদানি বাড়লেও ব্যবসায়ীরা সুবিধাবঞ্চিত

বণিক বার্তা প্রতিনিধি যশোর

কি-ওয়াল, পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য প্রয়োজনীয় সিঁড়ি, সড়ক মালবাহী ট্রাকের জন্য পার্কিং ইয়ার্ডের মতো অতিপ্রয়োজনীয় সুবিধা নেই যশোরের নওয়াপাড়া নৌবন্দরে। তার পরও বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আমদানির সঙ্গে বাড়ছে রাজস্ব আহরণের পরিমাণও। প্রতি বছর বন্দর থেকে আহরিত হয় প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব। রাজস্ব বাড়লেও এখান থেকে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নওয়াপাড়া নৌবন্দরে হাজার ৪৫০টি জাহাজে পণ্য আমদানি করা হয়েছে লাখ ২৫ হাজার টন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে হাজার ৪৫৮টি জাহাজে লাখ ২৯ হাজার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হাজার ৪৬৪টি জাহাজে লাখ ৩২, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে হাজার ৪৭০টি জাহাজে লাখ ৩৫ হাজার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে হাজার ৪৬৮টি জাহাজে লাখ ৮৪ হাজার সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেড় হাজার জাহাজে পণ্য এসেছে লাখ টন। বন্দর দিয়ে মূলত সার, সিমেন্ট, কয়লা, গমসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়।

জানা গেছে, ২০০৪ সালের এপ্রিলে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় নদীবন্দর স্থাপনের ঘোষণা দেয়া হয়। ২০০৭ সালের মে মাসে শুরু হয় এর কার্যক্রম। ভৈরবের চেঙ্গুটিয়া থেকে ভাটপাড়া ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমানা নির্ধারণ করা হয় নদীবন্দরটির জন্য। স্থাপন করা হয় ছয়টি পন্টুন। তার পর থেকে রাজস্ব আহরণ শুরু বন্দরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে রাজস্বের পরিমাণ। কিন্তু সে অনুযায়ী নদীবন্দরের অবকাঠামোর ন্যূনতম উন্নয়ন হয়নি।

বরং কাজের অংশীদারিত্ব নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিব্লউটিএ) নওয়াপাড়া পৌরসভার মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে এশীয় উন্নয়ন বাংকের (এডিবি) ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। উদ্ভূত জটিলতার কারণে নওয়াপাড়া নদীবন্দরটি একটি পরিপূর্ণ বন্দর হিসেবে গড়ে উঠতে পারছে না, যে কারণে কাঙ্ক্ষিত সুবিধা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সড়ক, রেল নদীপথে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে নওয়াপাড়ায় সার, খাদ্যশস্য সিমেন্ট ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটে। এলাকা পরিণত হয় দেশের অন্যতম বড় বিপণনকেন্দ্রে। আমদানি করা সার খাদ্যশস্য চট্টগ্রাম মোংলা বন্দরে বড় জাহাজ থেকে খালাসের পর তা ছোট বার্জ কার্গোতে নদীপথে নওয়াপাড়া বন্দরে আনা হয়। ভৈরবে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক বার্জ কার্গো থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো হয়। এছাড়া ভারত থেকে স্থলপথে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার বেশির ভাগ ওয়াগনে করে দর্শনা স্থলবন্দর হয়ে নওয়াপাড়ায় আনা হয়। পরে এসব পণ্য সড়ক নদীপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেয়া হয়।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরটি আধুনিকায়নের ক্ষেত্রেও নেয়া হচ্ছে না কোনো প্রকল্প। বন্দর থেকে প্রতি বছর মোটা অংকের রাজস্ব আহরণ হলেও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

সার খাদ্যশস্য আমদানিকারক আদিত্য মজুমদার বলেন, নদের ভাঙনরোধে কি-ওয়াল, বার্জ কার্গো থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য প্রয়োজনীয় সিঁড়ি, সড়ক মালবাহী ট্রাকের জন্য পার্কিং ইয়ার্ড না থাকায় প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা ঘাটও নিজেরাই তৈরি করে নিচ্ছি। পণ্য আমদানি বাড়লেও উন্নয়ন হচ্ছে না নওয়াপাড়া নদীবন্দরের। ব্যবসায়ীরা কর পরিশোধ করেও কোনো প্রকার সুবিধা পাচ্ছেন না।

একই অভিযোগ করে নওয়াপাড়া সার খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ জালাল হোসেন বলেন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন