পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি থামাতে হিলিতে আমদানিকারক-মন্ত্রণালয় বৈঠক

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, হিলি

সম্প্রতি ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করার পর থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়ছেই। এই মূল্যবৃদ্ধি রুখতে ও কেউ যেন পেঁয়াজ মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি করতে না পারে সে লক্ষ্যে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকদের সাথে বৈঠক করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নুর মোহাম্মদ মাহবুবুল হক। বৈঠকের পর তিনি স্থানীয় খোলা বাজারের ব্যবসায়ী-ক্রেতা ও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সাথেও কথা বলেন।


বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারকদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে বন্দর দিয়ে কী পরিমান পেঁয়াজ আমদানি করা হয়, বর্তমানে মজুত আছে কিনা এবং কী দামে বিক্রি করছেন- সেসব বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা বলেন। 

বৈঠক শেষে তিনি হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকদের গুদাম ঘর ও আড়তগুলো পরিদর্শন করেন এবং কী দামে পেঁয়াজ করছেন তা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এর পরে তিনি খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম পর্যবেক্ষণ করতে হিলি বাজারের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন। সেই সাথে পেঁয়াজ বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথেও কথা বলেন তিনি।

তিনি সকল দোকানদারকে পেঁয়াজের মূল্যতালিকা টাঙানোর নির্দেশনা দেন, সেই সাথে কোন বিক্রেতা দাম বেশি নিলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। 

এরপরে তিনি সরেজমিন হিলি স্থলবন্দরের পণ্য প্রবেশ পথ সীমান্তের শুন্যরেখা পরিদর্শন করেন এবং সেখানে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করেন। এর পরে তিনি হিলি স্থলবন্দরের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সেখানে কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন। 

এসময় তার সাথে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাফিউল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ, মেয়র জামিল হোসেন, ভাইসচেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা, সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন, পেঁয়াজ আমদানিকারক সাইফুল ইসলাম, বাবলুর রহমানসহ অনেক ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নুর মোহাম্মদ মাহবুবুল হক পরে সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি ভারত পেঁয়াজ সম্পর্কে তাদের পলিসি কিছুটা পরিবর্তন করেছে। প্রথমে তারা এক্সপোর্ট প্রাইস ৮৫২ ডলারে নির্দিষ্ট করে দেয়। এরপর তারা পেঁয়াজ রফতানি একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে একটা বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সেবিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সবসময় মনিটরিং করছে, আমরা চাই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে পেঁয়াজের মূল্য বাজারে মানুষকে যেন কষ্ট না দেয়, যেন একটি সহনীয় পর্যায়ে থাকে। সে লক্ষ্যেই আমরা হিলি স্থলবন্দরে প্রকৃত অবস্থা দেখতে এসেছিলাম। কী পরিমান পেঁয়াজ বন্দর দিয়ে এসেছে বা এখানে কোন মজুত রয়েছে কিনা বা তারা কী দামে বিক্রি করছেন, সেই দামের সাথে ঢাকার মূল্যের সাথে যে পার্থক্য রয়েছে সেটি কেন হচ্ছে- সেগুলোই দেখা আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। 

মূল্যবৃদ্ধি রুখতেই হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সাথে এই বৈঠক জানিয়ে মাহবুবুল হক বলেন, ‘পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রুখতে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কিনা সেগুলো মনিটরিং করেছি। সেই সাথে এখানে এসে জানতে পারলাম ভারত অংশে একটা সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে- যে পেঁয়াজগুলো ভারত অংশের কাস্টমসে অ্যাসেসমেন্ট হয়ে গেছে সেগুলো হয়তো আজকে ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি যদি হয় তাহলে আমরা আশা করছি যে পেঁয়াজের দাম এখানে যেটা দেখেছি ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকার ভিতরে আছে সেটার মূল্য হয়তো আরো কিছুটা কমে আসতে পারে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন