রেনিটিডিন বিতর্কের ধাক্কা ওষুধ শিল্পে

জনস্বাস্থ্য রক্ষার প্রশ্নে কোনো আপস নয়

দেশে অ্যাসিডিটির ওষুধের বাজার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর মুনাফার একটি উল্লেখযোগ্য অংশও আসছে এখান থেকেই। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রেনিটিডিন গ্রুপের ওষুধে ক্ষতিকর উপাদান পাওয়ায় বিশ্বের দেশগুলো সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই, এরই মধ্যে রেনিটিডিন গ্রুপের ওষুধ বাজার থেকে তুলে নেয়ার উদ্যোগসহ কাঁচামাল আমদানিও নিষিদ্ধ করেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ত্বরিত পদক্ষেপ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু এখানেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। বাজার তদারকিও জোরদার করতে হবে। বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট ওষুধের বিপণন। সন্দেহ নেই, ওষুধের বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অ্যাসিডিটির ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রি করা যায়, ফলে অনেক ভোক্তাই কিছু হলেই গ্যাসের ওষুধ পরিভোগ করে থাকে। এমন প্রবণতাও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, দেশে উত্পাদিত সিংহভাগ ওষুধের গুণগত মান নির্ণয় হয় না। উন্নত বিশ্বে রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রতিটি ওষুধের বায়োইকুইভ্যালেন্স পরীক্ষা সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। দেশে বায়োইকুইভ্যালেন্স টেস্ট সম্পন্ন করার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি না হলে ওষুধের গুণগত মান নিয়ে দেশ-বিদেশে সব সময়ই প্রশ্ন থেকে যাবে এবং রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে। সব ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত মানসম্পন্ন পরীক্ষাগার স্থাপনের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।

নকল, ভেজাল, ক্ষতিকর নিম্নমানের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ এবং এসব ওষুধ উত্পাদন, বাজারজাত বিক্রয়সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত এবং শাস্তি প্রদানের দায়িত্ব ঔষধ প্রশাসনের। কিন্তু ঔষধ প্রশাসন এক্ষেত্রে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য নজির স্থাপন করতে পারেনি। কারণ ঔষধ প্রশাসনের প্রচুর সমস্যা, দোষত্রুটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। রয়েছে জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতা, নৈতিকতা মূল্যবোধের অভাব। ঔষধ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্তব্যকর্মে অবহেলা, জবাবদিহিতার অভাব, নৈতিক অধঃপতনের জন্য পর্যন্ত কাউকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি। ঔষধ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে আরো কঠোর করতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আদলে গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে মেধাস্বত্ব ছাড়ের সুযোগ অধরাই থেকে যাবে, কাজের কাজ কিছুই হবে না। ১৯৮২ সালে যখন যুগান্তকারী ওষুধনীতি প্রণীত বাস্তবায়ন হয়, তখন বাংলাদেশের ওষুধের বাজার ছিল ১৭৩ কোটি টাকার। বর্তমানে বাংলাদেশে ওষুধের বাজার দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকায়। বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রায় ৩০ হাজার ব্র্যান্ডের ওষুধ উত্পাদন করলেও কোনো ওষুধের মেধাস্বত্ব নেই। মেধাস্বত্ব ছাড়ের সুযোগ নিয়ে উন্নত বিশ্বে উদ্ভাবিত পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ কপি করে এদেশে বাজারজাত বিক্রি করা হচ্ছে। কিছু ওষুধ রফতানিও হচ্ছে। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশাল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অথচ কোনো প্রতিষ্ঠানেরই পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ নেই কেন, তা নিয়ে সরকারও কোনোদিন প্রশ্ন তোলেনি।

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সম্পাদিত গবেষণা কার্যক্রম দেশের উন্নয়নমূলক কাজে লাগছে না। অধিকাংশ গবেষক গবেষণা করেন শুধু গবেষণা প্রবন্ধের সংখ্যা বাড়ানো প্রমোশন লাভের জন্য। বাংলাদেশের অনেক গবেষণা কার্যক্রমে দেশের স্বার্থ প্রতিফলিত হয় না, যদিও এর পেছনে শত শত কোটি টাকা খরচ

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন