মায়ের ডাকের আহ্বায়কের ভাইকে ২ ঘণ্টা পর ছেড়ে দিয়েছে যৌথ বাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম তুলির বড় ভাই সাইফুল ইসলাম শ্যামলকে ছেড়ে দিয়েছে যৌথ বাহিনী। গতকাল বেলা পৌনে ৩টার দিকে রাজধানী শাহীনবাগের বাসা থেকে আটক করা হয় তাকে। ছেড়ে দেয়া হয় প্রায় ২ ঘণ্টা পর।  

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একাধিক চাঁদাবাজির অভিযোগ থাকায় রাজধানীর শাহীনবাগ এলাকা থেকে গতকাল বেলা পৌনে ৩টায় সাইফুল ইসলাম শ্যামল নামের এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিকটস্থ সেনাবাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে নিজ বাসায় দিয়ে আসা হয়।’ 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পূর্ববর্তী তথ্য অনুযায়ী, সাইফুল ইসলাম শ্যামলের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে রমনা থানায় একটি মামলা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কারাভোগ করেছিলেন। এছাড়া আরেকটি মামলায় ২০১৬ সালে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন বলে জানা যায়। শ্যামলের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার কারণেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিকটস্থ সেনাবাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, সাইফুল ইসলাম শ্যামল “‍মায়ের ডাক” নামক সংগঠনের প্রধান সানজিদা ইসলাম তুলির বড় ভাই হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ প্রচার হয়েছে। এক্ষেত্রে তার পারিবারিক পরিচয়কে প্রাধান্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের অপপ্রচার অনাকাঙ্ক্ষিত। এছাড়া তার সঙ্গে সেনাবাহিনী কর্তৃক অসৌজন্যমূলক আচরণের দাবিও ভিত্তিহীন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সবাইকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রকৃত তথ্য প্রচারের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’

২০১৩ সালে গুমের শিকার হন সানজিদা ইসলাম তুলির ছোট ভাই সাজেদুল ইসলাম সুমন। এরপর গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ নামে সংগঠন গড়ে তোলেন তুলি।

তুলির বোন আফরোজা ইসলাম আঁখি জানান, শ্যামলকে ধরে নিয়ে গিয়ে তেজগাঁওয়ে যৌথ বাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হয়। সেখানে তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর বিকালে শ্যামলকে শাহীনবাগের বাসায় পৌঁছে দেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে সাইফুল ইসলাম শ্যামলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিগত আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী রেজিমের মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ড অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে পুনরাবৃত্তির ঘটনায় আমরা বিস্মিত। গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া শ্যামলকে কেন তুলে নিয়ে যাওয়া হলো, সে বিষয়ে নাগরিক কমিটি সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চায়।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন