২০৩০ সাল

এআইয়ে বিনিয়োগ দাঁড়াতে পারে প্রায় ২০ ট্রিলিয়ন ডলার

বণিক বার্তা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে কর্মসংস্থান খাতকে প্রভাবিত করবে ছবি: কম্পিউটারওয়ার্ল্ড

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিতে ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বিশ্ব অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এ ব্যয় মোট ১৯ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন বা ১৯ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে, যা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এ বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে, কর্মক্ষমতা উন্নত করতে এবং আরো ভালো পণ্য ও পরিষেবা তৈরি করতে সক্ষম হবে। ‘অর্থনীতি ও চাকরির ওপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশ্বিক প্রভাব’ শিরোনামে ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক গবেষণায় এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। 

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই বিশ্বজুড়ে কর্মসংস্থান খাতে প্রভাব ফেলবে, যেমন যোগাযোগ কেন্দ্র, অনুবাদ পরিষেবা, অ্যাকাউন্টিং ও যন্ত্রপাতি পরিদর্শনের মতো বিভিন্ন শিল্প। এ পরিবর্তনকে উদ্দীপিত করতে সহায়তা করছেন ব্যবসায়িক নেতারা, যাদের মধ্যে ৯৮ শতাংশ প্রায় সর্বসম্মতভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য এআইকে একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করেন। কারণ কোম্পানিগুলো তাদের দক্ষতা বাড়াতে, খরচ কমাতে ও পরিষেবার গুণমান উন্নত করার জন্য এআইয়ের সম্ভাবনাকে গ্রাহ্য করছে। আইডিসির গবেষণা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ব্যবসায় এআইনির্ভর সমাধান ও পরিষেবায় ব্যয় করা প্রতিটি ডলারের জন্য বিশ্ব অর্থনীতিতে অতিরিক্ত ৪ দশমিক ৬ ডলার তৈরি হবে। কারণ এআইনির্ভর সমাধানের জন্য চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও পরিষেবা সরবরাহকারীদের রাজস্ব বাড়বে। অর্থাৎ এআইয়ে খরচ বৃদ্ধি উৎপাদনশীলতা বাড়ায় ও নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি করে, যা পরে অন্যান্য ব্যবসা ও পুরো অর্থনীতির উপকারে আসে। 

আইডিসির পূর্ববর্তী একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, ২০২৮ সালের মধ্যে বৈশ্বিক ব্যবসায়িক খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে প্রায় ৬৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে। সম্প্রতি কোম্পানিগুলো এআই প্রযুক্তি গ্রহণে ক্রমে আগ্রহী হচ্ছে। আইডিসির গবেষণা বিশ্লেষক লাপো ফিওরেটি বলেছেন, ‘২০২৪ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্রুত উন্নয়ন ও ব্যবহারের একটি পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। নিয়মিত কাজগুলো স্বয়ংক্রিয় ও নতুন দক্ষতা উন্মোচন করে এআই অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে, শিল্পগুলোকে পরিবর্তন করবে, নতুন বাজার তৈরি করবে এবং কোম্পানির মধ্যে প্রতিযোগিতার চিত্র বদলে দেবে।’

এদিকে আইডিসির ‘ফিউচার অব ওয়ার্ক’ কর্মচারী জরিপে দেখা গেছে, বেশির ভাগ কর্মী ধারণা করছেন, আগামী দুই বছরে তাদের কাজের কিছু অংশ বা বেশির ভাগই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অন্যান্য প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় করা হবে। তবে অল্প কিছু কর্মী ধারণা করছেন, তাদের পুরো কাজই সম্পূর্ণরূপে এআই দ্বারা স্বয়ংক্রিয় হবে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মীরা তাদের কাজের পরিবর্তন প্রত্যাশা করছেন, কিন্তু তাদের ভূমিকা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপন হবে বলে আশঙ্কা করছেন না।

আইডিসির ওয়ার্ল্ড ওয়াইড রিসার্চের গ্রুপ ভাইস প্রেসিডেন্ট রিক ভিলার্স বলেছেন, ‘এআই আমাদের চাকরি প্রতিস্থাপন করবে কিনা, তা নিয়ে আমরা সবাই স্বাভাবিকভাবেই কৌতূহলী।’ সম্প্রতি আইডিসিকে সাক্ষাৎকার দেন বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী। তার রবাত দিয়ে রিক ভিলার্স বলেন, ‘কীভাবে আমাদের কাজকে এআই দ্বারা সহজ ও উন্নত করা যায়, এ প্রশ্ন নিজেদের করা উচিত। এআই আপনার কাজকে প্রতিস্থাপন করবে না, তবে যিনি আপনার চেয়ে এটি ভালো ব্যবহার করতে জানেন, তিনি আপনার কাজকে প্রতিস্থাপন করবেন।’ 

গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, এআইর বিস্তার কিছু কাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তবে প্রতিষ্ঠানগুলোয় নতুন কিছু পদ তৈরি হবে, যেমন এআই নৈতিকতা বিশেষজ্ঞ ও এআই প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ার। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন