ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বন্যা

ঘরবাড়ি হারিয়েছে বালিয়ারা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর গ্রামে ফিরে এসেছেন অনেকেই। শুধু টিনের চালগুলো ছাড়া ঘরের আর কিছুই খুঁজে পাননি ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

জেলার কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী বালিয়ারা গ্রামে বাস করেন পারভীন বেগম। স্বামী মারা গেছেন ১০ বছর আগে। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে দুটি মাটির ঘরে কোনোমতে চলে যাচ্ছিল তাদের জীবন। গত ২৩ আগস্ট রাতে হঠাৎ করেই ঘরে পানি উঠে যায়। এক কাপড়েই ঘর থেকে বের হয়ে যান পারভীন বেগম। পানি নেমে যাওয়ার পর শুধু টিনের চালগুলো ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পাননি।

পারভীন বেগম বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার আগে আমাদের জীবিকার জন্য কিছু রেখে যাননি। আমার ছেলেও ছোট। গ্রামে ভিক্ষা করে চাল ও কিছু টাকা পাই, তা দিয়ে মা-ছেলের সংসার চলে। থাকতাম দুটি মাটির ঘরে। ২৩ আগস্ট রাতে ঘরে পানি উঠে যায়। পরে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরে এসে দেখি আমার ঘর নেই। এখন আমি অন্যের বাড়ি থাকছি। ছেলেও থাকে আরেকজনের বাড়িতে। স্থানীয় মেম্বারের কাছে গিয়েছিলাম, তিনি বললেন, সরকারি ঘর যদি বরাদ্দ হয়, তাহলে আমার নাম দেবেন। তবে তা কবে পাওয়া যাবে নিশ্চিত নয়।’

শুধু পারভীন বেগম নয়, আরো অনেকেই হারিয়েছেন ঘরবাড়ি। গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পানি ঢুকে পড়ে সালসা নদীতে। সে পানিতে তলিয়ে যায় কসবা উপজেলার বায়েক ও কায়েমপুর ইউনিয়নের কিছু অঞ্চল। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট স্পষ্ট হচ্ছে। বন্যায় টিনের, মাটির ও সেমিপাকা ঘর; কালভার্ট এবং গ্রামীণ সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অধিকাংশ ঘর ছিল মাটির। পানির কারণে ভেঙে পড়েছে এসব ঘর।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোক্তার বলেন, ‘প্রথম দিকে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে পরিবারগুলোকে ২ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর নির্মাণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে বলেছি। এক হাজার বান্ডিল টিন ও নগদ অর্থ চেয়েছি, যদি এগুলো বরাদ্দ দেয়, তাহলে ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণে সহায়তা করা যাবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন