নতুন রূপে জোসলিন আর্ট মিউজিয়াম

শাকেরা তাসনীম ইরা

জোসলিন আর্ট মিউজিয়ামের আমেরিকান গ্যালারি ছবি: শ্যাড স্কট/ফোর্বস

আমেরিকান ও সমসাময়িক গ্যালারিগুলোয় ন্যাটিভ আমেরিকান শিল্পকে সম্পূর্ণরূপে একীভূত করার মতো অভূতপূর্ব কাজ করেছে জোসলিন আর্ট মিউজিয়াম। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প জাদুঘরগুলোর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ ঐতিহ্যগতভাবে ন্যাটিভ আমেরিকান শিল্পগুলো পৃথকভাবে প্রদর্শিত হতো। বিভিন্ন সংস্কৃতির শিল্পকে একত্রিত করে নতুন এ উপস্থাপনা আমেরিকান ইতিহাসের আরো জটিল ও সত্যিকারের চিত্র প্রতিফলিত করে। জোসলিন আর্ট মিউজিয়ামের এ পদক্ষেপ ঔপনিবেশিক শাসনের ইতিহাসকে স্বীকৃতি দেয়। পাশাপাশি ন্যাটিভ আমেরিকান শিল্পকে দেয় সমান গুরুত্ব। শিল্পের জগতে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।

মিউজিয়ামে ন্যাটিভ আমেরিকান ও আমেরিকান সংগ্রহগুলোকে একত্রিত করার সিদ্ধান্তটি মানুষের অভিবাসন এবং ভ্রমণের কিছু বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নেয়া হয়েছিল। ইউরোপীয় শিল্প অধ্যয়ন করার জন্য বিদেশে যাওয়া শিল্পীদের দ্বারা তৈরি হওয়া আমেরিকান ইমপ্রেশনিস্ট চিত্রকর্মের সংগ্রহের সঙ্গে ন্যাটিভ আমেরিকান শিল্পের প্রেরী শৈলীর তুলনা করা হয়েছে এতে। জোরপূর্বক স্থানান্তর এবং সাংস্কৃতিক মিশ্রণ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল প্রেরী শৈলী। জোসলিন মিউজিয়ামের বর্তমান উপস্থাপনা ভ্রমণের সুবিধাজনক এবং ট্রম্যাটিক অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত শিল্প প্রকাশের সাদৃশ্য ও পার্থক্যগুলোকে হাইলাইট করে।

স্বাধীন শিল্পকর্মকে আরো প্রাধান্য এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রদর্শন করতেও উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে জোসলিন আর্ট মিউজিয়াম। ঊনবিংশ শতাব্দীতে উত্তর আমেরিকার অভ্যন্তরে এক সফরে জার্মান রাজকুমার ম্যাক্সিমিলিয়ান জু উইড দ্বারা অর্জিত বাফেলো রোবস প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হচ্ছে মিউজিয়ামটিতে। এছাড়া সাধারণত ইউরোপীয় ঐতিহ্য থেকে উদ্ভূত শিল্পকর্মের জন্য সংরক্ষিত গ্যালারিগুলোয় আগের চেয়ে আরো বেশি আদিবাসী শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে।

সামগ্রিকভাবে জোসলিন আর্ট মিউজিয়ামের পুনঃপ্রতিষ্ঠা বিভিন্ন শিল্প ঐতিহ্যের মধ্যকার সংযোগগুলোকে তুলে ধরছে। অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উদযাপন করে দর্শনার্থীদের জন্য একটি অনন্য ও অর্থপূর্ণ অভিজ্ঞতা তৈরি করার লক্ষ্যেই মূলত এগিয়ে যাচ্ছে মিউজিয়ামটি। জোসলিন আর্ট মিউজিয়ামের নতুন ভবনটি স্নোহেট্টা দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে। সম্প্রসারিত ভবনটি নেব্রাসকার প্রাকৃতিক দৃশ্য থেকে অনুপ্রাণিত। নতুন ভবনটির স্থপতি ক্রেগ ডাইকার্স ১৯৮০-এর দশকে রাজ্যটিতে সময় কাটিয়েছিলেন। 

রোন্ডা ও হাওয়ার্ড হকস প্যাভিলিয়ন মিউজিয়ামের পূর্ববর্তী বক্সি স্ট্রাকচারগুলোর পুরোপুরি বিপরীত। এতে বক্র দেয়াল, বড় জানালা ও প্রাকৃতিক আলোর ওপর ফোকাস করা হয়েছে। ভবনের ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেক্ট মিশেল ডেলক অঞ্চলের স্থানীয় উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণী থেকেও অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। জোসলিন আর্ট মিউজিয়ামের সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণে ১০ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয় করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে মিউজিয়াম সম্প্রসারণের লক্ষ্য ছিল দর্শনার্থীর জন্য আরো বেশি প্রবেশযোগ্য স্থান তৈরি করার পাশাপাশি অঞ্চলের সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্য তুলে ধরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন