ডিসেম্বরের মধ্যে এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে —অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ৪০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকেও সহায়তার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। গতকাল সচিবালয়ে এডিবি, জাইকা ও অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ তোমোহিদে ইচিগুচির নেতৃত্বে সংস্থাটির প্রিন্সিপাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার সুমন দাস গুপ্ত ও ইজি ইয়ামাদা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জাইকার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘জাপান আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান জাইকা। তাদের সঙ্গে আমাদের অনেকগুলো প্রকল্প রয়েছে। জ্বালানি, অবকাঠামো, বন্দর, রেলওয়ে ও মেট্রোরেলের মতো প্রকল্প রয়েছে, এগুলোর বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যেগুলো চলমান রয়েছে, সেগুলো তারা অব্যাহত রাখবে। এছাড়া নতুন কিছু প্রকল্প যেমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তারা অভিজ্ঞ। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’

এডিবির পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্ন্যান্স সেক্টরের (পিএসএমজি) পরিচালক চিদেম আকেনের নেতৃত্বে সংস্থাটির প্রিন্সিপাল পাবলিক ম্যানেজমেন্ট ইকোনমিস্ট আমিনুর রহমান ও কান্ট্রি ইকোনমিস্ট চন্দন সাপকোটা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এডিবির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের বেশকিছু প্রকল্প রয়েছে। বৈঠকে এসব প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সংস্কার ছাড়া তারা বন্দর, বিদ্যুৎ নিয়ে আলাপ করেছে। তারা আমাদের সহায়তা দেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক।’

ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিরা সিম্পসনের নেতৃত্বে দেশটির ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পবকে ও সেকেন্ড সেক্রেটারি ইকোনমিক জশ গ্যাকুতান গতকালের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া একটি বড় দেশ। তারা যৌক্তিকভাবে সহায়তা করে। তারা আমাদের গার্মেন্টসে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এখানে আঞ্চলিক বাণ্যিজের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। আমি বলেছি যে বর্তমানে আমাদের আঞ্চলিক বাণিজ্য বেশ সীমিত। তারা যদি এখানে আসে, তাহলে আমরা আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ করে দিতে পারব। আঞ্চলিক বাণিজ্যের বেশ প্রয়োজন। জ্বালানি ও কৃষি খাত নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের সহযোগিতা করবে। সার্বিকভাবে তিন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে আলোচনায় তারা আমাদের সঙ্গে আরো বেশি সংযুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে।’

উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে কী পরিমাণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘তারা বর্তমানে যা দিচ্ছে, আমরা তার চেয়ে অনেক বেশি চাইছি। অস্ট্রেলিয়া বেশকিছু কারিগরি সহায়তা দিতে চাইছে। রাজস্ব সংস্কারে প্রয়োজন হলে তারা আরো সহায়তা দেবে। বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ ঠিকই আছে। তবে এর ব্যবহার নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যেখানে প্রাধিকার বেশি দেয়া প্রয়োজন ছিল, দেয়া হয়নি। আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে কম সুদে অর্থায়ন সুবিধা দেয়ার কথা বলেছি।’

প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড় না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘প্রকল্প যে বন্ধ হয়ে গেছে তা নয়। অনেকগুলোই চালু আছে। একনেক সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’ এ বছরের মধ্যে বিদেশীদের কাছ থেকে অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এডিবি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ কোটি ডলার দেবে।’

উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী ও অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন