শান্তিগঞ্জের নৌকার হাট

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিলেটে

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে নৌকা কিনতে আসছেন ক্রেতারা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ভরা বর্ষায় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে হাওরে পানি থইথই করছে। অন্য হাওরাঞ্চলের মতোই এ উপজেলার বেশির ভাগ মানুষের জীবিকার অপরিহার্য অনুষঙ্গ নৌকা। দরগাপাশা ইউনিয়নের আক্তাপাড়া মিনাবাজারে প্রায় তিন যুগ ধরে বিক্রি হয়ে আসছে বিভিন্ন ধরনের নৌকা। সপ্তাহের শুক্রবার এ হাটে নৌকাসহ বাঁশের বাজার বসে।

এবারো বর্ষায় জমে উঠেছে শান্তিগঞ্জের নৌকার হাট। জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৌকা কিনতে আসছেন ক্রেতারা। তবে হাটে নৌকার সরবরাহ থাকলেও অন্য বছরের চেয়ে এবার দাম একটু বেশি বলে জানান ক্রেতারা। শ্রমিকের মজুরি ও কাঠের দাম বাড়ায় নৌকার দাম এবার বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। প্রতি মৌসুমে এ হাটে কোটি টাকার নৌকা বিক্রি হয় বলেও দাবি করেন তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শান্তিগঞ্জসহ দিরাই, জগন্নাথপুর, ছাতক, হবিগঞ্জ, আজমিরিগঞ্জ থেকেও বজরা আসে এ হাটে। আমতলী, হিল্লা, গলই, কিলা, পাতামী ও বারকী নৌকা আসে। এসব নৌকা তৈরিতে চাম্বল, কুমা, আম আর রেইন্ট্রি কাঠ বেশি ব্যবহার করা হয়। ১২-২৫ হাত দৈর্ঘ্যের নৌকা আকার অনুযায়ী দাম হাঁকানো হয়। একেকটি নৌকা ৫-১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। তবে নৌকার ধরনের ওপর দাম নির্ধারণ করা হয়।

উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রাম থেকে হাটে নৌকা কিনতে আসা সহিবুর রহমান বলেন, ‘হাওর পানিভর্তি। নৌকা ছাড়া চলাচলের বিকল্প নেই। নৌকায় একদিকে যেমন চলাচল করা যায়, অন্যদিকে মাছ ধরতেও সুবিধা হয়। পরিবারের প্রয়োজনে হাটে নৌকা কিনতে এসেছি। তবে অন্যান্য সময়ের চেয়ে নৌকার দাম বেশি।’

জগন্নাথপুর থেকে নৌকা কিনতে আসা রাইজুল বলেন, ‘মিনাবাজার নৌকার হাটের সুনাম রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে হাটে নৌকা কিনতে আসেন ক্রেতারা। পরিবারের প্রয়োজনে আমিও নৌকা কিনতে এসেছি। দরদাম করছি, পছন্দ হলে কিনব।’

নৌকা বিক্রেতা এলাইছ মিয়া বলেন, ‘আগের চেয়ে শ্রমিকের মজুরি বেশি। তাই নৌকার দাম বেড়েছে। বাজারে ক্রেতা থাকলেও বেশি দামের কারণে নৌকা কিনতে চান না অনেকেই। তার পরও নৌকা বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।’

নৌকা বাজারের ইজারাদার মুরাদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যৌথভাবে বাজার ইজারা নিয়েছি। একটা সময় নৌকার চাহিদা কমে আসছিল। তবে এবারের বন্যার পর চাহিদা বেড়েছে। আমাদের ধারণা, প্রতি মৌসুমে এ হাটে কোটি টাকার নৌকা বিক্রি হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন