গ্রাহকের সঙ্গে সংযোগ ঘটানোই মূল উদ্দেশ্য রাজা মেটালের

নিজস্ব প্রতিবেদক

এক্সপোতে আকর্ষণীয় পণ্য নিয়ে হাজির থাকবে রাজা মেটাল ছবি: রাজা মেটাল

রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ দেশের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় সব এক্সিবিশনে অংশগ্রহণ করে। অন্যান্য বছরের মতো এবারো কিচেন ও বাথ এক্সপো-২০২৪-এ রাজা মেটাল অংশগ্রহণ করছে। এবারের মেলায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রাজা মেটালের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে গ্রাহকের সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানো। যাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে রাজা মেটালের সম্পর্ক আছে তা জোরদার করা। একই সঙ্গে নতুন নতুন গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা। মূলত পণ্যের চেয়ে সার্ভিস কোয়ালিটির বিষয়টি গ্রাহকের সামনে তুলে ধরতে চায় রাজা মেটাল। 

এছাড়া মেলায় প্রিমিয়াম মানের শাওয়ার মিক্সার, বেসিন মিক্সার, রেইন শাওয়ার, সিংক মিক্সার, বাথটাব মিক্সার ইত্যাদি পণ্য তুলে ধরবে কোম্পানিটি। রাজা মেটালের প্রতিটি পণ্য আন্তর্জাতিক মানের। নিজেদের গুণগত মানের কারণে পণ্যগুলোর ওপর ১২ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে আসছে রাজা মেটাল। রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের পণ্য থ্রি লেয়ার ইলেকট্রোপ্লেটিং সমৃদ্ধ বিধায় মরিচারোধী। তাছাড়া আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি এসব পণ্য মানবশরীরের জন্য ক্ষতিকর লেড বা সিসাকে নিয়ন্ত্রণ করে করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিমুক্ত।

রাজার শাওয়ার মিক্সার দেয় পারফেক্ট টেম্পারেচার। অতিরিক্ত গরম পানির ফ্লোয় স্কিন পুড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বিধায় শাওয়ারে যাওয়া যায় ইউনিক এক্সপেরিয়েন্স। রাউন্ড বা স্কয়ার দুই ধরনের মিক্সার বাথরুমের ডিজাইন অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়। সঙ্গে ভালো মানের হ্যান্ডশাওয়ার পরিবারের শাওয়ারকে করে আনন্দদায়ক। 

প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই কোম্পানিটি মানের দিকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। বাথরুম ও কিচেনের মান উন্নয়ন করতে ১৯৭৩ সালে আলহাজ্ব তাজিজুল হক (মাস্টার সাহেব) ছোট্ট কারখানায় অল্পসংখ্যক অ্যাকসেসরিজ প্রস্তুত করা শুরু করেন। নাম দিলেন রানী ইলেকট্রোপ্লেটিং। ১৯৭৮ সালে রানী ইলেকট্রোপ্লেটিং থেকে পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ। তখন রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদিত প্রায় সব পণ্যই সিলেটে বিক্রি হয়ে যেত। একই সঙ্গে তিনি ঢাকায় আয়োজিত বিভিন্ন এক্সিবিশনে অংশগ্রহণ শুরু করেন। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯৯০ সালে রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ জাতীয় শিল্প মেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে।

২০০৪ সালে আলহাজ্ব তাজিজুল হক (মাস্টার) পরলোকগমন করেন। এরপর তার প্রথম সন্তান নজরুল ইসলাম রাজার নেতৃত্বে শুরু হয় নতুন পথচলা। 

২০০০ সালের পর দেশে ফসেট মার্কেট বড় হতে শুরু করে। রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলো ভালো মানের ফ্ল্যাট তৈরিতে মনোযোগ দেয়। একই সঙ্গে সরকারি আবাসন প্রজেক্ট বাড়তে খাকে। ২০১০ সালের পর দেশব্যাপী নির্মাণকাজ বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। বিদেশ থেকে ফসেট আমদানি করে দেশে বিক্রি বহগুণে বেড়ে যায়। নতুন ডিজাইন ও কম মূল্যের চায়নিজ পণ্য দেশের ফসেট মার্কেটে দারুণ প্রভাব বিস্তার করে। ফলে ফসেটের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রভিযোগিতাও বহুগুণে বেড়ে যায়।

নজরুল ইসলাম বুঝতে পারলেন ফসেটের গুণগত মানের দ্রুত উন্নয়ন না ঘটালে দেশী-বিদেশী ফসেটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হবে। তাই তিনি মনোযোগ দেন ফ্যাক্টরির মান উন্নয়নে। নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে তিনি চীন, তাইওয়ান, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে বিভিন্ন এক্সিবিশনে অংশ নেন। ধীরে ধীরে সেসব দেশ থেকে আধুনিক মেশিনারিজ কিনতে থাকেন। এতে ফসেটের গুণগত মানের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটে। স্থাপিত হয় বাংলাদেশের ফসেট ইন্ডাস্ট্রির প্রথম ও সম্পূর্ণ ইলেকট্রোপ্লেটিং প্লান্ট। এতে ফসেটের দ্রুত মরিচা ধরা বন্ধ হয়। দেশের লবণাক্ত কোস্টাল এরিয়ায়ও রাজার ফসেট হয়ে ওঠে টেকসই। একই সঙ্গে ফসেটের পানি লিক বন্ধ হয়। ফলে রাজার ফসেট দেশব্যাপী জনপ্রিয় হতে শুরু করে। দেশের স্বনামধন্য সরকারি ও বেসরকারি আর্কিট্যাক্ট, ইঞ্জিনিয়ার ও ডেভেলপারদের কাছে রাজার পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। 

নজরুল ইসলাম জাপানের জাইকার কনসালট্যান্সিতে ফ্যাক্টরিতে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কোয়ালিটি কন্ট্রোল মেথড চালু করেন। এতে কর্মপরিবেশ ও কাজের মানের দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটে। 

২০২২ সালে তারই স্বীকৃতি মেলে। এসএমই কর্তৃপক্ষ নজরুল ইসলামকে মাঝারি শিল্পে পুরুষ ক্যাটাগরিতে জাতীয় বর্ষসেরা উদ্যোক্তা পুরস্কারে ভূষিত করে। রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের পণ্য সারা দেশের এক হাজারেরও বেশি ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটর, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করছে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে দুই শতাধিক কর্মী। বর্তমানে রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের পণ্য বিদেশে রফতানির প্রক্রিয়া চলছে।

সারা দেশের অগণিত ক্রেতাসাধারণ, আর্কিট্যাক্ট, প্রকৌশলী ও দর্শনার্থীর কাছে পণ্য প্রদর্শন ও সম্পর্ক দৃঢ় করতে কিচেন অ্যান্ড বাথ এক্সপো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। তাই এ এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী সবাইকে রাজা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন