কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বুলাস পেমফিগয়েড (ত্বকে ফোসকা পড়া) রোগ দেখা দিয়েছে শিশুদের মধ্যে। আক্রান্ত অনেক শিশুকে নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন অভিভাবকরা। প্রতিদিন অনেক শিশু এ রোগের চিকিৎসা নিতে আসছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আক্রান্ত শিশুর সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানান চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বুলাস পেমফিগয়েড একটি দীর্ঘস্থায়ী ও সাধারণ ত্বকের ব্যাধি। রোগটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের হয়। ত্বকের বাইরের স্তরের নিচে টিস্যু আক্রান্ত হলে এ রোগ দেখা দেয়। এতে ত্বকে প্রথমে লালচে গোটা দেখা দেয়। পরে ফোসকার মতো হয়। ওই জায়গায় চুলকাতে থাকে। রোগটির কারণ এখনো জানা যায়নি। কয়েক মাসের মধ্যে এমনিতেই চলে যায়। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে পাঁচ বছরের মতো সময় লাগতে পারে। সাধারণত ফোসকা নিরাময় এবং চুলকানি কমাতে ওষুধ সেবন করতে হতে পারে।
চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসকদের চেম্বারে আক্রান্ত শিশুদের ভিড়। অনেক অভিভাবক জানেনই না এটি কী রোগ। শিশুর অস্বস্তির কারণে তারা চিকিৎসকের কাছে এসেছেন।
আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এসেছেন মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বাংপাই গ্রামের রহিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার তিন বছরের মেয়ে মারিয়ার কোরবানি ঈদের আগ থেকে এ সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এলে তিনি বলেন, বুলাস পেমফিগয়েড রোগ হয়েছে। আরো অনেক শিশুর এ সমস্যা দেখেছি ওই চেম্বারে।’
ফেলনা গ্রামের রুনা বেগম বলেন, ‘আমার সাড়ে তিন বছরের মেয়ে আলিফা আক্তারের শরীরে ১০ দিন ধরে ফোসকা দেখা দিয়েছে। রাতে যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারে না। প্রথমে গ্রামের ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলাম। দিন দিন শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই চৌদ্দগ্রামে নিয়ে এসেছি।’
এ ব্যাপারে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ফারুক আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শরীরে এ রোগ দীর্ঘদিন থাকলে কিডনি আক্রান্ত হতে পারে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সামছুল ইসলাম রানা বলেন, ‘বর্তমানে শিশুদেরও এ রোগটি দেখা দিচ্ছে। বহির্বিভাগে অনেক শিশু এ সমস্যা নিয়ে আসছে।’
তবে আক্রান্ত কত রোগী প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে তার সঠিক তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন আবাসিক চিকিৎসক হাসান মাহমুদ।