এমএসএমই-বান্ধব কর ব্যবস্থা প্রণয়ন করা প্রয়োজন

ছবি : বণিক বার্তা

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের একটি অন্যতম বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এটি ১৯৯৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে এ ব্যাংকের মোট ১৩৭টি শাখা ও ১৫০টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট রয়েছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির হেড অব এসএমই অ্যান্ড এগ্রি ব্যাংকিং ডিভিশনে নিয়োজিত সঞ্জীব কুমার দে। এমএসএমই খাতের ব্যবসায় তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে সম্প্রতি বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি

দেশের এমএসএমই খাতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাই?

নভেল করোনাভাইরাস মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়া দিয়েছে প্রবলভাবে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। আর যেকোনো স্বাভাবিক ব্যবসায়িক পরিস্থিতির ওপর বিরূপ প্রভাবের প্রাথমিক আঘাত আসে সিএমএসএমই খাতের ওপর। তাই বিগত কয়েক বছর সিএমএসএমই খাত ব্যবসায়িক পরিধি বৃদ্ধির চেয়েও বেশি নজর দিচ্ছিল ব্যবসায় টিকে থাকার লড়াইয়ে। বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা কার্যকর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে আমরা সিএমএসএমই খাতের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে কিছুটা পিছিয়ে থাকলে বিপর্যয় থেকে সুরক্ষা করতে পেরেছি। এখন আস্তে আস্তে এ খাত প্রবৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ এ খাত নিয়ে আমরা আশাবাদী।

দক্ষতার ঘাটতি এবং যথাযথ তথ্যের অভাবে এমএসএমই উদ্যোক্তারা পিছিয়ে পড়ছেন। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে করণীয় কী?

দক্ষতার ঘাটতি আর তথ্যের অভাব সিএমএসএমই খাতের অন্যতম বাধা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এসএমই ফাউন্ডেশন এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন নানা ধরনের কর্মশালার উদ্যোগ নিয়ে এ সমস্যাগুলোর সমাধানের কার্যকরী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে এবং সুফলও পাচ্ছে। বিভিন্ন নন-ফাইন্যান্সিয়াল সেবক যেমন ইনকিউবেশন প্রোগ্রামও হাতে নিচ্ছে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ও ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমেও এ সমস্যাগুলোর সমাধানের সুযোগ আছে।

এমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) চালু করার দাবি জানিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। এক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি?

প্রতিটা ব্যাংকেই এসএমই গ্রাহকের সেবা ও তথ্য প্রদানের জন্য পেশাদার কর্মী নিয়োগ করা আছে। এখন প্রায় সব ব্যাংকের শাখায়ই এসএমই গ্রাহকের জন্য সেবা প্রদানের জন্য সবসময় কোনো না কোনো কর্মীকে পাওয়া যায়। ওয়ান স্টপ সার্ভিসকে আরো কার্যকর করার চেষ্টা অব্যাহত।

এমএসএমই খাতের ব্যবসায় তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা কতটুকু কাজে লাগাতে পারছেন উদ্যোক্তারা?

প্রযুক্তিগত ইকোসিস্টেম গড়ে উঠতে সময় লাগবে। তার পরও গ্রাহকরা আস্তে আস্তে প্রযুক্তিনির্ভর দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড চালানোর চর্চা শুরু করেছে। বিভিন্ন ফিনটেক ও ব্যাংকগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এটাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। আমরাও প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল ঋণ কার্যক্রম শুরু করেছি এবং বেশকিছু পরিকল্পনাও অব্যাহত।

এমএসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন?

সরকার সবসময়ই এসএমই খাতের উন্নয়নসহায়ক নীতিনির্ধারণীতে তৎপর। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন অনুমোদন প্রক্রিয়া আর সুলভ ও সহজ করার সুযোগ রয়েছে। এসএমই বান্ধব ট্যাক্স/ভ্যাট পদ্ধতি প্রণয়নের সুপারিশ করছি। এছাড়া বিশেষ কিছু উৎপাদনশীল খাতের কর্মকাণ্ড শুধু এসএমই প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারণ করে করপোরেট ব্যবসার মাধ্যমে বিপণন করার পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন