ইসরায়েলি হামলার ৬৯ শতাংশ লক্ষ্যবস্তুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজার একটি ভবন ছবি: রয়টার্স

গাজার উপত্যকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছিল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। সেখানেও রেহাই মিলছে না তাদের। একের পর এক ইসরায়েলি হামলায় মারা পড়ছে অথবা আহত হচ্ছে। অনেকেই আশ্রয় হারিয়ে ছুটছে নতুন আশ্রয়ের খোঁজে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক শরণার্থী সংস্থা গতকাল জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল যেসব স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে ৬৯ শতাংশ বিদ্যালয় ভবন। যেখানে আশ্রয় নিয়েছিল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। 

বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, মানবতার এমন নির্লজ্জ লঙ্ঘন কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। গাজায় এখনই যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। এর আগে গত শুক্রবার সংস্থাটি জানিয়েছিল, ইসরায়েলি হামলায় গাজার ৭৬ শতাংশ বিদ্যালয় বিধ্বস্ত হয়েছে অথবা অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এদিকে ২৪ ঘণ্টায় গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় আরো শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েলের হামলায় গাজার ১০১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া ওই হামলায় আহত হয়েছে ১৬৯ ফিলিস্তিনি। হতাহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এতে উপত্যকাটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৫৫১। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, তেল আবিবের হামলায় ৮৫ হাজার ৯১১ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে, যার বেশির ভাগ নারী ও শিশু।

অন্যদিকে গতকালও গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৩৮ জন নিহত হয়েছে। হামাসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। হামাসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবির এলাকায় একটি আবাসিক ব্লকে বেশ কয়েকবার বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া আল-তুফফা এলাকার বাড়িঘর লক্ষ্য করে পৃথক বিমান হামলা চালানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, যুদ্ধবিমানগুলো হামাসের সামরিক অবকাঠামোগুলোয় আঘাত করেছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে অন্তত দেড় লাখ ইসরায়েলি। গত শনিবার তেল আবিবে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির সদর দপ্তরের বাইরে জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেয় তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি, গাজায় জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা ও আগাম নির্বাচনের দাবি জানায়।

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, লিকুদ পার্টির সদর দপ্তরের কাছে রাস্তা অবরোধ করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার সময় ইসরায়েলি পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়ে রাস্তা অবরোধ ও পথচারীদের বিপন্ন করেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি পুলিশ। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর আট মাস পেরিয়ে গেছে। এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে ইসরায়েলের শহরগুলোয় বিক্ষোভ হয়ে আসছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী সংগঠন ‘হোফশি ইসরায়েল’ বলছে, শনিবারের বিক্ষোভে দেড় লাখের বেশি মানুষ যোগ দিয়েছিল। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর এটা ইসরায়েলে হওয়া বড় বিক্ষোভগুলোর একটি। খবর আনাদোলু এজেন্সি ও আল জাজিরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন