গবেষণাপত্র উন্মোচন অনুষ্ঠানে আতিউর রহমান

এখনই রফতানিমুখী খাতে প্রণোদনা বন্ধের সময় নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি : সংগৃহীত

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণে আরো শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে রফতানিমুখী খাতকে প্রণোদনা প্রদানসহ সব ধরনের সহায়তা চালু রাখা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রেসক্রিপশন মেনে এখনই রফতানিমুখী খাতে প্রণোদনাসহ সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করার সময় নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর . আতিউর রহমান। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত গবেষণাপত্র উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাবেক গভর্নর।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলেডেভেলপমেন্ট অব লেবার কন্ডিশনস ইন বাংলাদেশ ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ শীর্ষক গবেষণাপত্রের উন্মোচন করা হয়। ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক . মামুন হাবিব গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।

আতিউর রহমান বলেন, ‘২০২৬ সালের নভেম্বরে উন্নয়নশীল থেকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার সময় বাংলাদেশ সহযোগী দেশগুলোরমোস্ট ফেবারড নেশন (এমএফএন)’ স্ট্যাটাস হারাবে, শুল্কমুক্ত বাজার প্রত্যাহার হবে। সময় থেকে ১৪ শতাংশ রফতানি হ্রাস পাবে। এতে আরএমজি খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে খাতটিকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশকে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে আরো কঠোর নিয়মের মুখোমুখি হতে হবে। ওষুধ শিল্প বাণিজ্য-সম্পর্কিত মেধা সম্পদ অধিকার (টিআরআইপিএস) নীতিমালার মুখে পড়বে। সেজন্য দেশের রফতানি খাতগুলোর ভিত্তি শক্ত করতে আরো কয়েক বছর সহায়তা করতে হবে।

কি-নোট উপস্থাপনে আতিউর রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এখন এসব ভর্তুকি প্রত্যাহার করার সময় নয়। বর্তমানে রফতানি খাতের ৯৩ শতাংশই স্বল্প প্রযুক্তিভিত্তিক উৎপাদন পোশাক রফতানির ওপর নির্ভর করে। এছাড়া অপর্যাপ্ত বাণিজ্যিক লজিস্টিক এবং অবকাঠামো সরবরাহ, প্রতিকূল কর ব্যবস্থা, জটিল বিনিয়োগনীতি এবং ব্যবসায়িক বিধিবিধান, আর্থিক খাতে গভীরতার অভাব বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে।

সময় তিনি বিনিময় হার স্থিতিশীল করা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রফতানিতে পণ্য গন্তব্য বহুমুখীকরণ, ব্র্যান্ডিং, রেমিট্যান্সের হার বৃদ্ধি, আর্থিক খাতের শাসনকে শক্তিশালী করা এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক আস্থা জোরদারের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি পুঁজিবাজারের গভীরতা এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা, একাডেমিয়া এবং অন্য প্রশিক্ষণ প্রদানকারীদের সঙ্গে শক্তিশালী বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মানবপুঁজি উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়ার ওপরও জোর দেন তিনি।

প্যানেল আলোচনায় ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের লেবার অ্যাটাচি লীনা খান বলেন, ‘শ্রমিক নেতাদের ওপর নির্যাতন, হয়রানি অন্যায্য শ্রম অনুশীলনের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বাণিজ্যনীতি জিএসপি সুবিধাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকারকে সমর্থন করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জন ফে বলেন, ‘বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রশাসনে শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি শুধু শ্রম বিভাগের কাজ নয়, সরকারের প্রত্যেকটা বিভাগ নিয়ে কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে আমরাও নিয়মিত কাজ করছি।

অ্যামচেম প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে সময় আরো বক্তব্য রাখেন শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবির, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রোগ্রাম ম্যানেজার নীরন রামজুথান প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন