সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শহীদ আনোয়ারা উদ্যান ৩০ দিনের মধ্যে ফেরতের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ফার্মগেটে গতকাল বিকালে ‘ফার্মগেট শহীদ আনোয়ারা উদ্যান রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে এক সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিবিজড়িত ফার্মগেটের ঐতিহাসিক শহীদ আনোয়ারা উদ্যানসহ ঢাকার সব উদ্যান দখলমুক্ত করে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ।

গতকাল বিকালে ফার্মগেট শহীদ আনোয়ারা উদ্যান চত্বরে ‘ফার্মগেট শহীদ আনোয়ারা উদ্যান রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এক সংহতি সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশে বক্তারা দেশজুড়ে পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। 

ফার্মগেটে শহীদ আনোয়ারা উদ্যানের এ জায়গাটি গণপূর্ত অধিদপ্তরের। এটির রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের দায়িত্ব ছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি)। পরে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে জায়গাটি মেট্রোরেলের প্রকল্প অফিস ও নির্মাণ উপকরণ রাখার কাজে ব্যবহার করে আসছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শেষে উদ্যানটি ফিরিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও এখন বাণিজ্যিক প্লাজা তৈরি করে জায়গাটি নিজেদের করে নিতে চাইছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত বছর অক্টোবরে ফার্মগেট ফুট ওভার ব্রিজ উদ্বোধনের সময় শহীদ আনোয়ারা উদ্যান উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিলেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।

সমাবেশে বক্তারা এ এলাকায় আর বাণিজ্যিক কাঠামো তৈরি না করে উদ্যানটি পুনরুদ্ধার করে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। সমাবেশে শহীদ আনোয়ারা উদ্যান থেকে মেট্রোরেলের নির্মাণসামগ্রী অপসারণ করে উদ্যানটি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার কাজ শুরুর জন্য ‘ফার্মগেট শহীদ আনোয়ারা উদ্যান রক্ষা আন্দোলন’-এর পক্ষ থেকে আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব উত্তর সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকে ৩০ দিনের আলটিমেটাম ঘোষণা করেন।

প্রাণ-প্রকৃতি বিষয়ক লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থর সঞ্চালনায় ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সৈয়দা রত্না, তরুণ নগর পরিকল্পনাবিদ রাকিবুল রনি, শিক্ষা আন্দোলনের নেতা রুস্তম আলি খোকন, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অমিত দে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আকতার মাহমুদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, ফার্মগেট এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে খান আসাদুজ্জামান মাসুমসহ অনেকে।

সমাবেশে সংহতি জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী, ধানমন্ডি সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন, বাপা, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা), বিআইপি, নারীপক্ষ, বারসিক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), পরিজা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, দুনিয়াদারি আর্কাইভ, প্রাকৃতিক কৃষি, স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এন্ডেঞ্জার্ড ওয়াইল্ডলাইফ (সিউ), গ্রীন ভয়েস, সিআরবি রক্ষা আন্দোলন-চট্টগ্রাম, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলন, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, প ফাউন্ডেশন, আইপিডি, বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ), নাট্যদল প্রাচ্যনাট, নদী সুরক্ষা সংগঠন নোঙ্গর, বাংলাদেশ, জলপুতুল পাপেট স্টুডিও, সেভ ফিউচার বাংলাদেশ, সবুজ পাতা, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, লেখক শাহীন আখতারসহ নানা শ্রেণী-পেশার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন