বরিশালে ঈদে যানজট ঠেকাতে মরিয়া পুলিশ

ভুরঘাটা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১১টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত

এম মিরাজ হোসাইন I বরিশাল

ছবি : বণিক বার্তা

বরিশালে ঈদে যানজট ঠেকাতে মরিয়া পুলিশ। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভুরঘাটা থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত ১৫৯ কিলোমিটার হাইওয়ের একাধিক স্থান অপেক্ষাকৃত সরু। এ অংশের ১১টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাইরে কোনো টোল প্লাজার কারণে যানজট সৃষ্টি হলে যানবাহনের টোল ফ্রি করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলা পুলিশ। ঈদ সামনে রেখে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত বরিশালের হাইওয়ের ১১টি স্থানে যাতে কোনোভাবেই যানবাহনের চাকা থেমে না যায়, সেজন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা ও মহানগর পুলিশ। 

বরিশাল সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাসুদ খান বলেন, ‘‌বরিশালের ভুরঘাটা থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত ১৫৯ কিলোমিটার হাইওয়ের একাধিক স্থান অপেক্ষাকৃত সরু। এর মধ্যে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ ও সাগরদি রুপাতলী এবং গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা রয়েছে। এসব স্থানে ঈদের আগে ও পরে যাতে বড় ধরনের কোনো যানজট না হয় সেজন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ এরই মধ্যে বিষয়টি পুলিশের নজরে এনেছে।’ 

ভুরঘাটা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১৫৯ কিলোমিটার হাইওয়ে ছুটে চলেছে একটি মহানগরী, দুটি জেলা, ১১টি উপজেলা, ১৭টি হাট-বাজারের ওপর দিয়ে। এর মধ্যে বরিশালের মাহিলারা, নথুল্লাবাদ, রুপাতলী ও সাগরদি এলাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সুশৃঙ্খল করতে পারলে এবারের ঈদযাত্রায় কোথাও গাড়ির চাকা থামবে না, যাত্রা হবে নির্বিঘ্ন—এমন দাবি করেছেন সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।

বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানান, আগে বরিশাল থেকে সর্বোচ্চ ২০টি ব্যানারে দেড় শতাধিক দূরপাল্লার গাড়ি চলত। পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর ৫৫টি ব্যানারে প্রায় ৬০০ দূরপাল্লার গাড়ি চলছে। কিন্ত ঈদের সময়টায় গাড়ি চলাচলের কোনো হিসেব থাকে না। ব্যানার প্রতিযোগিতায় কে কার আগে আসতে-যেতে পারে, চলে সেই প্রতিযোগিতা এবং এ প্রতিযোগিতায় রাস্তা আটকে যাওয়ায় সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজটের। অধিকাংশ যানজটের জন্য আমরাই দায়ী।

বরিশাল জেলা ও মহানগর পুলিশের দাবি, ঈদের আগে-পরে বরিশাল মহানগরীর নথুল্লাবাদ, সাগরদি ও রুপাতলী এলাকাসহ জেলার গৌরনদী, বাটাজোর, টরকি, ইচলাদি মিলিয়ে ১১টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ হাজার যানবাহন অতিক্রম করে। এর মধ্যে তিনটি স্থানে রয়েছে ব্রিজ টোলঘর। ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকা চিহ্নিত করে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত প্রায় ৩৫০ সাধারণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে শুধু ঈদে যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে। তাদের মতে, এবার যানজটকে জিরো টলারেন্স হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বরিশালের পুলিশ সুপার ওয়হিদুল ইসলাম বলেন, ‘‌টোল প্লাজার কারণে ন্যূনতম যানজটের সৃষ্টি হলে যানবাহনের টোল ফ্রি করে দেয়া হবে। এ রমজানে সব ধরনের যানজট ঠেকাতে আমরা আমাদের ট্রাফিক ইউনিটের সঙ্গে ১৫০ জন জনবলকে আলাদা ডিউটি দিয়েছি। আমরা এজন্য ১১টি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাও নির্ধারণ করেছি।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের এডিসি রুনা লায়লা বলেন, ‘‌ঈদের সময়ের যানজট ঠেকাতে এবার আমরা আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে আছি। এক্ষেত্রে মানা হচ্ছে জিরো টলারেন্স নীতি। সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এবারে যানজট মনিটরিং করা হচ্ছে।’

বিএমপির কমিশনার মো. জিহাদুল কবির বলেন, ‘‌এবার যানজট নিরসনে আমরা বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। নগরীকে তিনটি জোনে ভাগ করে তিন এডিসির নেতৃত্বে পর্যাপ্ত ফোর্স এরই মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। আশা করি, এবারের ঈদযাত্রা ভালো হবে।’ 


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন