বগুড়ায় এক মাসে শতকোটি টাকার সেমাই বিক্রির লক্ষ্য

বণিক বার্তা প্রতিনিধি I বগুড়া

মেশিনে তৈরি হচ্ছে সাদা সেমাই ছবি : নিজস্ব আলোকচিত্রী

বগুড়া জেলায় চার শতাধিক সেমাই কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় তৈরি হচ্ছে সাদা সেমাই। অনেকে শুধু দুই ঈদে সেমাই তৈরি করেন। আবার অনেকে সারা বছর কারখানায় সেমাই তৈরি ও বিক্রি করেন। সেমাই উৎপাদনকারীরা বলছেন, প্রতিটি কারখানায় মৌসুমে গড়ে ৩০-৪০ লাখ টাকার সেমাই বিক্রি হয়। সে হিসাবে ৪০০ কারখানায় এক মাসে শতকোটি টাকার সেমাই বিক্রির লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি সেমাই কারখানা রয়েছে বগুড়া শহরের মাদলা, বেজোড়া, ঢাকন্তা, শ্যাওলাকান্দি, বনানী, সুলতানগঞ্জপাড়া, চেলোপাড়া, নারুলী ও বৃন্দাবনপাড়ায়। চাহিদার কারণে এখন সাদা সেমাই তৈরি হচ্ছে শাজাহানপুর, শেরপুর, ধুনট, কাহালু, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ, দুপচাঁচিয়া ও গাবতলী উপজেলায়।

কারখানাসংশ্লিষ্টরা জানান, সাদা সেমাই দেখতেও সাদা। দুই ধরনের সাদা সেমাইয়ের মধ্যে একটি সুতার মতো চিকন এবং অন্যটি তুলনামূলক মোটা। খোলাবাজারে সেমাই দুটি বিক্রি হচ্ছে প্রায় একই দামে। বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারে ময়দা দিয়ে তৈরি সাদা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৭০ টাকা কেজি, আবার সাদা সেমাই ভেজে প্যাকেট আকারে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৮০ টাকা কেজি। বগুড়ায় তৈরি সাদা সেমাই ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, পাবনা, দিনাজপুর, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রামসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সরবরাহ হচ্ছে।

বগুড়া শহরের রাজা বাজার এলাকার সাদা সেমাই ব্যবসায়ীরা জানান, সময়মতো কারিগর পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও বেশি মজুরি দিতে হয়। তবে ময়দার দাম এ বছর কমেছে। যে কারণে লাভ বেশি হচ্ছে। রোদ না থাকলে সাদা সেমাই শুকানো যায় না। রোদ হলে দ্রুত শুকিয়ে বাজারজাত করা যায়। পাইকারি ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো কুরিয়ারের মাধ্যমে সেমাই পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। দামের বিষয়টি হচ্ছে শুকানো এবং সেমাইয়ের গুণাগুণের ওপর।

বগুড়া শহরের ঢাকন্তা গ্রামের সেমাই শ্রমিকরা জানান, ময়দা পেস্ট করে মেশিনের মাধ্যমে সেমাই তৈরি করা হয়। মেশিন থেকে বের হওয়া সাদা সেমাই প্রথমে ভেজা থাকে। ভেজা সেমাইকে হাতের সাহায্যে একটি চিকন কাঠির সঙ্গে ঢেউ তোলার মতো করে দুই ভাঁজ দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। এরপর এটি বাজারজাত করা হয়। রান্নার সময় একটু ভেজে নিতে হয়। ৭৪ কেজি ময়দা দিয়ে সেমাই পাওয়া যায় ৬৯-৭০ কেজি। রোদ থাকলে প্রতিদিন ২৮০-৩৫০ কেজি সেমাই তৈরি করতে পারেন তারা।

বগুড়া শহরের রওশন সেমাই কারখানার পরিচালক আরিফুজ্জামান জানান, তারা সাদা ও লাচ্ছা সেমাই তৈরি করে উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করছেন। ঈদের আগে সেমাইর চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ সময় শ্রমিককে দিনরাত পরিশ্রম করে অর্ডার পূর্ণ করা হয়। বগুড়া ছাড়াও কমপক্ষে ১৮টি জেলায় এসব সেমাই বিক্রি হয়। বগুড়ায় ৩০০-৪০০ কারখানা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন