৫৮ বছর পর চালু হলো সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌবন্দর

প্রথম দিনেই ভারতে গেল ১০ টন তুলা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজশাহী

রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর গতকাল উদ্বোধন করেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ছবি : নিজস্ব আলোকচিত্রী

আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ৫৮ বছর পর চালু হয়েছে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর। প্রথম দিনেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে ১০ টন তুলার একটি ট্রলার ময়া বন্দরে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে তুলার ট্রলারটি পাঠিয়ে বন্দর উদ্বোধন করেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী। সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনসহ রাজশাহী বিভাগের জনপ্রতিনিধি ব্যবসায়ী নেতারা।

১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগ পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া গোদাগাড়ী-ভারতের লালগোলা নৌঘাটের মধ্যে নৌপথে বাণিজ্য চালু ছিল। পরে রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ভারতের নৌ-প্রটোকলের আওতায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর সুলতানগঞ্জ ঘাটটি নদীবন্দরের মর্যাদা পেল। এর আগে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত হয় রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ আর পশ্চিমবঙ্গের ধূলিয়ান নৌ-রুটে বাণিজ্য চালুর। রাজশাহী থেকে মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার একটি নৌপথের অনুমোদন থাকলেও পদ্মার নাব্য সংকটের কারণে কার্যকর করা হয়নি। ফলে রুটটি সংক্ষিপ্ত করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর পর্যন্ত আড়াআড়ি ২০ কিলোমিটার পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া হবে। শুরুতে নৌপথে ভারত থেকে পাথর, বালি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য আনা হবে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দরটি চালুর ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। বাণিজ্যে আসবে গতিশীলতা। দুই দেশের দূরত্ব কমবে ১২০ কিলোমিটার। এতে সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে সময় খরচ কমে যাবে। বছরে নৌপথে দুই দেশের মধ্যে প্রায় হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করছেন তারা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ময়া-সুলতানগঞ্জই শুধু নয়, এরই মধ্যে আমরা ভারতের সঙ্গে পর্যটক পরিবহনে একটি অভাবনীয় জায়গায় চলে গিয়েছি। ২০১৯ সালে মধুমতির প্রান্তরে আমরা ঢাকা থেকে কলকাতা পর্যন্ত ট্যুর সার্ভিস চালু করেছিলাম। এরই মধ্যে আমাদের নয়টি ভারতের চারটি ট্যুরস আদান-প্রদান হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ময়া-সুলতানগঞ্জ বন্দর তারই একটি উদাহরণ। এই বন্দরকেন্দ্রিক ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে দারুণ।

সময় রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান থেকে নৌপথটি গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ, রাজশাহী পাকশী হয়ে আরিচাঘাট পর্যন্ত গেছে। দীর্ঘদিন এর ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ ছিল না। আমি গত পাঁচ বছর বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া, লেখালেখি ডিও লেটার দিয়েছি। ফলে এটা গতিশীল হয়েছে। অবশেষে প্রথম পর্যায়ে সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌপথে নৌযান চলাচল শুরু হলো। পরবর্তী সময়ে এটি রাজশাহী হয়ে আরিচা পর্যন্ত চালু হবে। রাজশাহী নগরীতে নৌবন্দর স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে রাজশাহীর অর্থনীতি গতিশীল হবে, অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

নৌপথে নৌযান চলাচল উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশের আয়োজন করে বিআইডব্লিউটিএ। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী- আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী- আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ- আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ রাজশাহী- আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কালাম আজাদ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন