নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছেন
১৯টি দেশের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান,
শ্রীলংকাসহ আফ্রিকান দেশগুলো থেকে পড়তে আসেন শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশে পড়াশোনার পরিবেশ,
শিক্ষার মান ও তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ভুটান, শ্রীলংকা ও সোমালিয়ার তিন শিক্ষার্থী-
বাংলাদেশ
আমার দ্বিতীয় বাড়ির মতো
কিঙ্গা শেরিং, ভুটান
শিক্ষার্থী, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
ভুটানরাজের দূরদর্শিতার কারণে সেখানকার
প্রতিটি ছাত্রের জন্যই উচ্চশিক্ষা সহজ হয়ে গেছে। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই
ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ়। এখানকার বহুমাত্রিক সংস্কৃতি, সমৃদ্ধ ইতিহাস ও আতিথেয়তার
কারণে ভুটানিরা বাংলাদেশকে পছন্দ করে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে আমি বেছে
নিয়েছি রাজকীয় বৃত্তির অংশ হিসেবে। বেছে নেয়ার পেছনে অবশ্য নানাবিধ কারণ রয়েছে, তার
মধ্যে প্রধান হলো, ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশ। এখানে ছাত্রদের বিভিন্ন স্টার্টআপে
সহযোগিতা করা হয়। তাত্ত্বিক পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক দক্ষতা ও শিল্প সম্পর্কিত
জ্ঞানকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়, যা ছাত্রদের ক্যারিয়ারে সহায়তা করে। তাছাড়া একটা বিস্তৃত
অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক রয়েছে যারা ক্যারিয়ার ও চাকরি নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে পাশে
থাকে। ইউনিভার্সিটির সহপাঠীরা যেমন সবসময় নিবেদিতপ্রাণ, তেমনই শিক্ষকরা বিদেশী ছাত্রদের
প্রতি সহযোগিতাপ্রবণ। বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ির মতো। এখানে থাকা সময়গুলো স্মরণীয়
হয়ে থাকবে।
সর্বাধুনিক
শিক্ষা এনএসইউকে আলাদা করেছে
হাসান আবদির রহমান আবদুল্লাহি, সোমালিয়া
শিক্ষার্থী, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
উচ্চশিক্ষার জন্য নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে
বাছাই করার জন্য বেশকিছু কারণ আছে। প্রথমত, আমার একাডেমিক লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রোগ্রামগুলোর সাদৃশ্য। তার সঙ্গে রয়েছে বহু সংস্কৃতির সমাবেশে এখানকার বৈচিত্র্যপূর্ণ
ও প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস। ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দান ও সর্বাধুনিক শিক্ষা সুবিধাসমূহ
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে অন্য অনেকের চেয়ে আলাদা করেছে।
এখানকার সঙ্গে সোমালিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থায়
পার্থক্য রয়েছে ঢের। এখানে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক বেশি সুগঠিত ও বাস্তবমুখী। কোর্সের
বহুমাত্রিকতা ও প্রেক্ষাপট আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে।
বাংলাদেশী শিক্ষা আমার ব্যক্তিগত ও
শিক্ষাগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলছে। এখানকার সাংস্কৃতিক বহুমাত্রিকতা
নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রশস্ত করতে সাহায্য করেছে। চিন্তনক্ষমতাকে শাণিত করতে ও দক্ষতা
বাড়াতে সহযোগিতা করেছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি।
সামাজিক
ন্যায়বিচার নিয়ে অনেক কিছু শিখেছি
নাদারাজাহ পাসদেবান, শ্রীলংকা
শিক্ষার্থী, পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড সোসিওলজি বিভাগ
আমি খুব আগ্রহী ছিলাম দক্ষিণ এশিয়ার
অর্থনীতি, মানবাধিকার ও সামাজিক পর্যায়ে কার্যক্রম নিয়ে সরকারি নীতিমালা সম্পর্কে জানতে
এবং তার মাধ্যমে নিজের দেশে পরিবর্তন আনতে।
এনএসইউ তাদের এসআইপিজি প্রোগ্রামের
মধ্য দিয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা সম্পর্কে শিক্ষা দেয়। এখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক
পর্যায়ের অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন। এনএসইউ হলো দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের নীতিমালা ও অর্থনৈতিক
নীতি গবেষণা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, সেমিনার ও বহুমাত্রিক
সংস্কৃতির অন্যতম কেন্দ্র। এসব দেখেই এনএসইউকে বেছে নিই।
আমার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার
শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় একই রকম। এখানে এসে যৌক্তিক বোঝাপড়া ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিয়ে
আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমার একাডেমিক জায়গা ছিল শাসনকার্যের বিভিন্ন নীতিমালা ও সমাজে
তার বাস্তবায়ন। আমি এখন বুঝতে পারি দক্ষিণ এশিয়ার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট আর এটা
আমাকে ভবিষ্যতে সহযোগিতা করবে।