সাইনোসাইটিস

শীতে সাইনোসাইটিসের ভোগান্তি এড়াতে করণীয়

যাদের সাইনাসের সমস্যা আছে, শীতকাল এলে তারা বেশ অসুবিধায় পড়েন। বিশেষত যাদের ঠাণ্ডাজনিত জটিলতা আছে তারা একটু বেশিই সংক্রমণঝুঁকিতে থাকেন। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণের কারণে সাইনাসে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। সাইনাস হলো নাকের আশপাশের ছোট ছোট গহ্বর বা প্রকোষ্ঠ। এগুলো বাতাস দ্বারা পূর্ণ থাকে এবং শরীরে বাতাস চলাচলে সাহায্য করে। সংক্রমণের কারণে সাইনাস কোষগুলো তরল (ফ্লুইড) দ্বারা পূর্ণ হয়ে যায়। এতে তীব্র প্রদাহের সৃষ্টি হয়। তখন এ অবস্থাকে বলা হয় সাইনোসাইটিস। অ্যালার্জির কারণেও এমন হয়। 

সাইনোসাইটিসের লক্ষণ ও উপসর্গ 

  নাক ভার হয়ে থাকে এবং নাক বন্ধ মনে হয়।

  মাথার সামনের অংশে ব্যথা এবং মাথা ভার ভার অনুভূত হয়।

  অনবরত হাঁচি হওয়ার পাশাপাশি নাক চুলকায় ও পানি পড়ে।

  অনেক সময় চোখ লাল হয়ে থাকে। ঘন ঘন চোখ দিয়ে পানি পড়ে।

  গাঢ়, হলদে রঙের ন্যাসাল ডিসচার্জ হয়।

  জ্বর দেখা দিতে পারে। খাবারের স্বাদ বা রুচি নষ্ট হয়ে যায়।

  গা ম্যাজম্যাজ করে ও মানসিকভাবে অবসাদ বোধ হয়।

শীতে সাইনোসাইটিস বেড়ে যাওয়ার কারণ 

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দেয়। স্বাভাবিকভাবেই শীতকালে জ্বর-ঠাণ্ডা-কাশির প্রকোপ বেড়ে যায়। ঠাণ্ডাজনিত কারণে সাইনোসাইটিস দেখা দেয়। এ সময় আবহাওয়া রুক্ষ হয়ে থাকে। বাতাসেও ধুলোবালি বেশি ওড়ে। বাতাসে ভেসে থাকা নানা ধরনের জীবাণু শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সাইনাসে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়। এতে সাইনাস কোষগুলো ফ্লুইড দ্বারা পূর্ণ হয়ে প্রদাহের সৃষ্টি করে।  

ভোগান্তি এড়াতে করণীয়  

  ঠাণ্ডা হাওয়া ও ধুলোবালি এড়িয়ে চলুন। সতর্ক থাকুন, নিশ্বাসের সঙ্গে কোনো জীবাণু যেন প্রবেশ করতে না পারে। 

  সাইনাসের ভোগান্তি উপশমে গরম ভাপ বা মেনথলের ভাপ নিতে পারেন। পাতলা তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে ভাপ নিলে সাইনাসের সমস্যা দ্রুত উপশম হয়।

  ফ্রিজের ঠাণ্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করুন। পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন এবং বেশি করে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।

        অ্যালার্জি উৎপাদনকারী খাবার এড়িয়ে চলুন।

  ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। মশার কয়েলের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকুন।

  বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করুন। 

  সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

স্বাভাবিকভাবেই শীতে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে আসে। এ সময় বিভিন্ন সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। তাই সুস্থ থাকতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাদ্য গ্রহণ জরুরি। সর্বক্ষণ গরম কাপড় পরিধান করুন এবং ধুলোবালি এড়িয়ে চলুন। এতে সাইনাসের সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। তবে যেকোনো স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

লেখক: নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন, কনসালট্যান্ট

ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতাল

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন