রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে কাজ করতে চান ফরেন ক্যাডারের মাহবুব রহমান

মেহেদী মামুন, জাবি

ছবি: বণিক বার্তা

‘গত ৪১তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে রেকমেন্ডেড। তখন মাস্টার্সেরও রেজাল্টের চাপ ছিল। ৪৩তম বিসিএসে ভাইভা অনেক ভালো দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাবতেই পারি নাই, ফরেন ক্যাডারে সেকেন্ড হবো।’

গতকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ৪৩তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশের পর বণিক বার্তার সঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন মো. মাহবুব রহমান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ৪৩তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। 

প্রথম বর্ষ থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল মাহবুব রহমানের। সেভাবেই চলছিল পড়াশোনা, কিন্তু ফলাফল প্রথামাফিক হচ্ছিল না। ইতিহাসে বোঝাপড়ার জন্য শিক্ষকরা তার প্রশংসা করতেন। দ্বিতীয় বর্ষ শেষে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে পড়াশোনায় আরো অনুপ্রাণিত হন। সবমিলিয়ে অনার্সে পঞ্চম স্থান ও মাস্টার্সে ছিলেন দ্বিতীয়।

মাহবুব জানান, ২০২০ সালে কভিডের লকডাউনে সময় পেশাগত লক্ষ্যে পরিবর্তন আসে। অবশ্য একাডেমিয়া থেকে বিসিএসের দিকে মোড় নিতে পরামর্শ পান বিভাগের শিক্ষক ও বন্ধুদের। তবে তখনো শিক্ষকতার আশা ছাড়েননি।

মাহবুবের ভাষায়,“তখনো একেবারে বিসিএসের দিকে মনোযোগী হইনি। স্যাররা বলছিলেন মাস্টার্স পরীক্ষাটা আগে দাও, বিসিএস আবারো দিতে পারবা। এরপর বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে কিছুটা অনিশ্চয়তার ভাব তৈরি হয়। করিডোরে দেখা হলে স্যাররা বলতেন, ‘মাহবুব খুব করে চেষ্টা করবা, ফরেন ক্যাডারের জন্য অবশ্যই’। কিন্তু মাস্টার্সের আগে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ও পরে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় লিখিত পরীক্ষার আগে মাত্র দুই মাস সময় পেয়েছিলাম। সেবার শিক্ষা ক্যাডারেই থামতে হয়েছিল।”

গতকাল ফলাফল জানার সময় কুমিল্লার মুরাদনগরে গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে ছিলেন তিনি। পরিবারের একমাত্র ছেলের এ সাফল্যে মা-বাবার অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে মাহবুব বললেন, ‘আমি যেমন ভাবিনি, ওনারাও ভাবেননি। তারা খুব উচ্ছ্বসিত ও উদ্বেলিত হয়ে গেছেন। কী বলবেন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।’

ক্যাডার সার্ভিসে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য কী- জানতে চাইলে বিসিএস ভাইভার প্রসঙ্গ টানেন মাহবুব রহমান। একই প্রশ্ন তাকে বোর্ডে করা হয়েছিল, এমনটা জানিয়ে বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘ দুই দশক মধ্যপ্রাচ্যে কাটিয়েছেন। এ সংক্রান্ত নানা অভিজ্ঞতা জানার সুযোগ আমার হয়েছে। কাজেই আমি মধ্যপ্রাচ্যের অভিবাসী আমার দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে কাজ করতে চাই। আপাতত এটাই চাওয়া।’

পরিবারে মাহবুবের সঙ্গে মা-বাবাও ছাড়াও রয়েছেন এক বোন। মাহবুব মুরাদনগরের ছালিয়াকান্দি ইন্দ্রভূষণ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও হাবিবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে এইচএসসির পাঠ চুকিয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন মাহবুব রহমান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন