দেশের পুঁজি, দেশের কল্যাণে

বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০৩৭ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। অর্থনীতির এমন উত্তুঙ্গ বিকাশে একটি বড় ভূমিকা পালন করছে দেশের বেসরকারি খাত। যেসব কনগ্লোমারেট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বড় করেছে তাদের অন্যতম ইউনাইটেড গ্রুপ।

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের চিত্র মাথায় রেখে ইউনাইটেড গ্রুপ সম্পদ বিনিয়োগ ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে জোর দিয়েছে। গ্রুপের আয় ব্যয়িত হয় সমাজের প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও নতুন উদ্যোগে পুনরায় বিনিয়োগের পেছনে। শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য শিক্ষা খাতে তাদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ, স্যার জন উইলসন স্কুল, ইউনাইটেড কলেজ অব নার্সিং দেশের শিক্ষা খাতে ভূমিকা রাখছে। এর বাইরে ইউনাইটেড ট্রাস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা ও গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে বৃত্তি। অনেক তরুণ-তরুণীর জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার। দেশের বিভিন্ন উৎপাদন ও সেবা খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে একদিকে যেমন ইউনাইটেড গ্রুপ হাজার হাজার মানুষকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলেছে, তেমনি দেশের নতুন প্রজন্মকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তর করতে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করেছে। দেশে তৈরি সম্পদ তারা দেশের কল্যাণে দেশেই বিনিয়োগ করছেন। নিশ্চিত করেছেন তাদের সামাজিক, মানবিক দায়বদ্ধতা। 

ইউনাইটেড গ্রুপের কর্মপরিসর বিস্তৃত। বিদ্যুৎ, আবাসন, খুচরা ও পরিষেবা, স্বাস্থ্য, উৎপাদন, শিক্ষা ও জ্বালানি খাতে রয়েছে তাদের উপস্থিতি। বিদ্যুৎ খাতে এ গ্রুপের অবদান উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৭ সালে প্রথম আইপিপি স্থাপনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু। তার পর থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র। দেশের প্রথম স্বাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও প্রথম সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আইপিপি প্রকল্প পরিচালনা করেছে ইউনাইটেড গ্রুপ। ১৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

নব্বইয়ের দশক থেকেই আবাসন খাতের অগ্রগতি নিয়ে কাজ করছে ইউনাইটেড গ্রুপ। বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, কনডোমিনিয়াম, বাণিজ্যিক অফিস ও বিভিন্ন স্থাপনায় রেখেছে সাফল্যের ছাপ। 

খুচরা বিক্রয় ও পরিষেবা খাতেও ইউনাইটেড গ্রুপের পদচারণা রয়েছে। দেশের প্রধান স্থানগুলোয় গড়ে তোলা হয়েছে নেটওয়ার্ক। খুচরা বিক্রয়ের জন্য ইউনিমার্ট, ওষুধের জন্য ওয়েলবিয়িং, হজ পরিষেবার জন্য ইউনাইটেড মক্কা মদিনা। এছাড়া রয়েছে ইউনাইটেড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পাওয়ার সার্ভিস, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ ও ইউনাইটেড এনার্জি ট্রেডিং।

ইউনাইটেড গ্রুপের স্বাস্থ্য খাত পরিচালিত হয় ইউনাইটেড হসপিটাল লিমিটেডের অধীনে। ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি বিশ্বমানের সেবা ও দক্ষ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত। বর্তমানে যা আরো বিস্তৃত হচ্ছে।

উৎপাদন খাত বাংলাদেশের জন্য একটি উদীয়মান বাজার। এক্ষেত্রে ইউনাইটেড গ্রুপের কার্যক্রম বহুমাত্রিক। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়ান জ্বালানি কোম্পানি  পেট্রোনাসের প্রতিনিধিত্ব পায়, এখন পর্যন্ত একমাত্র সরবরাহকারী হিসেবে বাজারে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সরব উপস্থিতি রয়েছে চা বাগান ও কেমিক্যাল প্লান্টসহ অন্যান্য উদ্যোগে। 

এছাড়া ইউনাইটেড গ্রুপ দেশের স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দরেও রেখেছে নিজের সাফল্যের ছাপ। নব্বইয়ের দশকে সামিট ইউনাইটেড ট্যাংক টার্মিনাল অধিগ্রহণের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু। দেশের প্রথম বেসরকারি খাত হিসেবে টার্মিনাল পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তী সময়ে এ যাত্রা আরো বিস্তৃত হয়। টার্মিনাল, স্থলবন্দর ও আনুষঙ্গিক বাণিজ্যেও এখনো অগ্রসরতার ধারা অব্যাহত।

দেশের অন্যতম কনগ্লোমারেট ইউনাইটেড গ্রুপের যাত্রা ১৯৭৮ সালে। কয়েকজন বন্ধু মিলে স্বপ্ন দেখা শুরু করে কর্মের দীর্ঘস্থায়ী ছাপ রেখে যাওয়ার ফল হিসেবেই আজ দেশের বৃহৎ আর্থসামাজিক অবকাঠামোনির্ভর বাণিজ্যিক কনগ্লোমারেটদের একটি ইউনাইটেড গ্রুপ। অনন্য বাণিজ্যিক দর্শন আর স্থানীয় অর্থনৈতিক সংস্কৃতি ও শিল্প ঐতিহ্য সম্পর্কে দীর্ঘ বোঝাপড়ার মাধ্যমে এগিয়ে চলছে গ্রুপটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন