স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে উচ্চপর্যায় বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের
আচার্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা এলে সম্মান দেখানো হবে।
গতকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) রাতে অনুষ্ঠিত
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের বিশেষ জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ অব্দুস সালামের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রো ভিসি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার
অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া।
সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের
(ইবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা স্বতন্ত্র
পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেট সদস্য ও অর্থনীতি
বিভাগের শিক্ষক মিথিলা তানজিল সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সভায় গত ১৯ মার্চ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের
১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হয়। একাডেমিক কাউন্সিলের
ওই সভায় সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
সূত্র জানায়, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার
একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপিত হয়। সিন্ডিকেটের অভ্যন্তরীণ
সদস্যরা কোনো মতামত দিতে রাজি হননি। তবে কয়েকজন বহিস্থ সদস্য গুচ্ছের বাধ্যবাধকতা নিয়ে
রাষ্ট্রপতির অনুশাসনের কথা তুলে ধরলে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হুবহু গ্রহণের
স্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য থেকে নির্দেশনা এলে ‘সম্মান দেখানো
হবে’ শব্দটি সংযোজিত
হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন
ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতি মেনে অনুষ্ঠানের বিরোধী শিক্ষকরা। তারা বিভিন্নভাবে প্রশাসনকে
চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন।
দেশে বর্তমানে তিনটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা
অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গুচ্ছ সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়,
৩টি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ৮টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলার পরও গুচ্ছ
ভর্তি পরীক্ষার বাইরে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
কিছু অভিযোগ শোনা গেলেও এ পদ্ধতিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে, কমেছে খরচও। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিশেষত আগের মতো ভর্তি পরীক্ষা থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপত্তি জানিয়ে আসছিল।
গুচ্ছে বাতিলে শিক্ষকরা আরো একটি যুক্তি দিচ্ছেন। তারা বলছেন, ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুণতে হচ্ছে আবেদন ফি। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনে একেক শিক্ষার্থীর আবেদনে চলে যায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফলে বছরব্যাপী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করেও কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী পায়নি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি ৭-৮ বার অপেক্ষমাণ তালিকা দিতে হয়েছে। আসন ফাঁকা রেখেই শেষ করতে হয়েছে ভর্তি কার্যক্রম।
সব মিলিয়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়, কিন্তু লাভ হয়নি। সরকার গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে অনড় থাকে।
সম্প্রতি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে আলোচনায় বসে
শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আলোচনা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়
গুচ্ছ পদ্ধতিতে ছিল, তারা এবারও থাকছে।