বন্ডের অর্থ ব্যয় পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনবে এপিএসসিএল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৯ সালে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছিল আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) তিন বছরের মধ্যে অর্থ ব্যয় করার কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি পটুয়াখালীতে কয়লার পরিবর্তে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে তহবিলের অব্যবহূত অংশ কাছে লাগাতে চায় কোম্পানিটি। কারণে কোম্পানিটি বন্ডের অর্থ ব্যয় পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাস্টির কাছে।

স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্যানুসারে, বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের ৫১ দশমিক ৬৬ শতাংশ ব্যয় করেছে এপিএসসিএল। অব্যবহূত রয়েছে ৪৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ অর্থ। বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার কারণে এর মেয়াদ আরো বাড়াতে বন্ডটির ট্রাস্টি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের কাছে আবেদন করেছে কোম্পানিটি। মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি পটুয়াখালীতে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের এলএনজিভিত্তিক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজে বন্ডে অর্থ ব্যয় করতে চায় কোম্পানিটি। পটুয়াখালীতে আগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কথা থাকলেও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে সেখানে কয়লার পরিবর্তে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

জানতে চাইলে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আবুল মনসুর বণিক বার্তাকে বলেন, পটুয়াখালীতে প্রথমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সরকার পরিকল্পনা পরিবর্তন করে সেখানে এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আমাদেরও পরিবর্তিত পরিকল্পনা অনুসারে অর্থ ব্যয় করতে হবে। কারণে একটি পরিবর্তিত অর্থ ব্যয় পরিকল্পনার পাশাপাশি অর্থ ব্যয়ের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য ট্রাস্টির কাছে আবেদন করা হয়েছে। ট্রাস্টি বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবে।

২০১৯ সালের নভেম্বরে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করে এপিএসসিএল। উত্তোলিত অর্থের মধ্যে ভূমি উন্নয়ন পূর্ত কাজের জন্য ৪৬ কোটি ৮০ লাখ, প্রাথমিক জ্বালানি কেনায় ৩০ কোটি, যানবাহন ক্রয়ে কোটি ৬০ লাখ, প্রকৌশলী পরামর্শক সেবার জন্য কোটি ৪০ লাখ, চলতি মূলধন বাবদ ১০ কোটি ৯৯ লাখ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) খরচ খাতে কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা ছিল। আইপিওর বাইরে সেই সময় প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে আরো ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি।

প্রতিটি হাজার টাকা ইস্যু মূল্যের লাখ নন-কনভার্টেবল ফুললি রিডিমেবল কুপন বিয়ারিং বন্ড আইপিওর মাধ্যমে ইস্যু করে এপিএসসিএল। ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে শতাংশ মার্জিন যোগ করে এপিএসসিএল বন্ডের বার্ষিক কুপন সুদহার নির্ধারিত হবে। এর পরিমাণ হবে সর্বনিম্ন দশমিক শতাংশ সর্বোচ্চ ১০ দশমিক শতাংশ। কুপন অর্ধবার্ষিক মেয়াদে প্রদেয়। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাজার টাকায় কোম্পানিটির একটি বন্ড বরাদ্দ ছিল। আইপিওতে আসার পরে প্রথম তিন বছর বিনিয়োগকারীরা ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে মার্জিনযুক্ত হারে লভ্যাংশ পাবেন। আর  চতুর্থ বছর থেকে লভ্যাংশের পাশাপাশি বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দেয়া শুরু হবে। এর মধ্যে চতুর্থ বছরে ২৫ শতাংশ, পঞ্চম বছরে ২৫ শতাংশ, ষষ্ঠ বছরে ২৫ শতাংশ এবং সপ্তম বছরে ২৫ শতাংশ অর্থ ফেরত দেয়া হবে। আর সপ্তম বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের পাওনা পুরোপুরি পরিশোধের পর বন্ডটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। বন্ডটি স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত অন্যান্য সিকিউরিটিজের মতোই লেনদেনযোগ্য।

গত ১২ ডিসেম্বর তৃতীয় বছরের দ্বিতীয় অর্ধবার্ষিকে (চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত) বন্ডহোল্ডারদের জন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কুপন রেট ঘোষণা করেছে এপিএসসিএল  নন-কনভার্টেবল অ্যান্ড ফুল্লি রিডিমেবল কুপন বেয়ারিং বন্ডের ট্রাস্টি। -সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে জানুয়ারি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন