আমদানি কমানো সম্ভব হয়নি

বেড়েছে চলতি হিসাব ও ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থনীতিতে দুশ্চিন্তার সঞ্চার করেছে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট। পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানি কমাতে তত্পর হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আমদানির এলসি খোলায় আরোপ করা হয়েছে নানা বিধিনিষেধও। এর পরেও আমদানি কমানো সম্ভব হয়নি। বরং অর্থবছরের প্রথম চার মাসে আমদানি বেড়েছে দশমিক ৭২ শতাংশ। একই সময়ে বেড়েছে চলতি হিসাব এবং ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতিও।

বৈদেশিক লেনদেনে চলতি হিসাবের ভারসাম্য-সংক্রান্ত হালনাগাদকৃত পরিসংখ্যান গতকালই প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে দেখা গিয়েছে, চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম চার মাস জুলাই থেকে অক্টোবরে দেশে আমদানি হয়েছে হাজার ৫৫০ কোটি ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের (২০২১-২২) একই সময়ে আমদানি হয়েছিল হাজার ৩৮৯ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। সে হিসেবে গত জুলাই থেকে অক্টোবরে দেশে আমদানি বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৭২ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে শতাংশ বেড়ে মোট পণ্য রফতানি হয়েছে হাজার ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে হাজার ৪৭৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল বাংলাদেশ। আমদানির চেয়ে রফতানি কম হওয়ায় প্রথম চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯৫৯ কোটি ডলারে।

সব মিলিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের অক্টোবর শেষে দেশে চলতি হিসাবের ভারসাম্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫০ কোটি ডলারে। আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৮৩ কোটি ডলার।

অর্থবছরের প্রথম চার মাসে দেশে ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতিও বড় হয়েছে। অক্টোবর শেষে লেনদেনের ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮৭ কোটি ডলারে। গত বছর একই সময় ঘাটতির পরিমাণ সীমাবদ্ধ ছিল ১৩৪ কোটি ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে মোট ৭১৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৭০৫ কোটি ডলার। হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক শূন্য শতাংশ।

সরকারের আমদানি নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপের প্রভাব তেমন একটা ছিল না অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেও। বাণিজ্য চলতি হিসাবের ঘাটতি না কমে বরং আরো বেশি স্ফীত হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চলতি হিসাবের ঘাটতি ছিল ২৫৪ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ঘাটতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় ৩৬১ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বর শেষে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতির পরিমাণ ৩৪৪ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যালান্স অব পেমেন্টের ঘাটতি ছিল মাত্র ৮১ কোটি ডলার।

চলতি বছর এপ্রিলে থেকে আমদানি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ৩০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। অর্থছাড় কমিয়ে দেয়া হয় সরকারি প্রকল্পে। চলতি হিসাবের ঘাটতিতে পড়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দিতে নিয়মিত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংককে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন