কোডেলকোর পূর্বাভাস

এক দশকে তামার বৈশ্বিক ঘাটতি ৮০ লাখ টনে পৌঁছবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

চিলিতে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তামা খনি এস্তোন্দিদা ছবি: গার্ডিয়ান

আগামী এক দশকের মধ্যে তামার বৈশ্বিক ঘাটতি ৮০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। শিল্প ধাতুটির চাহিদা অব্যাহত বাড়লেও সে অনুপাতে উৎপাদন বাড়ছে না। ফলে সম্প্রতি ঘাটতি কমার কিছু সম্ভাবনা দেখা দিলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না। সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ তামা উৎপাদন কোম্পানি চিলির কোডেলকো তথ্য জানিয়েছে।

কোডেলকো বোর্ডের চেয়ারম্যান মেক্সিমো পাচেকো এক কনফারেন্সে বলেন, চিলি, পেরু চীনের তিব্বত অঞ্চলসহ বিভিন্ন দেশে নতুন নতুন প্রকল্পের কারণে সম্প্রতি বিশ্ববাজারে তামা উদ্বৃত্ত তৈরি হয়েছে, তা স্বল্পমেয়াদি। এর বিপরীতে দীর্ঘমেয়াদি যে চাহিদার পরিস্থিতি, তাতে সরবরাহ ফের নিম্নমুখী হয়ে উঠবে। আগামী বছরগুলোয় নতুন নতুন প্রকল্প এলেও কিছু খনি থেকে উত্তোলন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৮০ লাখ টনে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী বছরগুলোয় বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতের জন্য তামার চাহিদা আকাশচুম্বী হয়ে উঠবে। বর্তমান উৎপাদন পরিস্থিতি বা সক্ষমতা চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে না।

কোডেলকোর পরিসংখ্যান বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বৈশ্বিক জ্বালানি স্থানান্তরের কারণে কোটি ৫০ লাখ টন থেকে বেড়ে ২০৩২ সালের মধ্যে বছরে গড়ে কোটি ১০ লাখ টনে উন্নীত হবে।

আর চাহিদা পূরণে চিলিতে অবস্থিত বিএইচপি মালিকানাধীন এস্তোন্দিদার মতো আটটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এস্তোন্দিদা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তামা উত্তোলন খনি।

বিশ্লেষকরা জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক ঘাটতি বছরে ৪৭ লাখ টনে নামিয়ে আনতে নতুন নতুন খনি তৈরি করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন অন্তত ১০০ বিলিয়ন ডলার। যদি নতুন খনি প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করতে না পারে তবে সরবরাহ চাহিদার মধ্যে ভারসাম্যহীনতা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছর বড় আকারের ঘাটতির পথে হাঁটছে তামার বৈশ্বিক বাজার। তবে আগামী বছর ধাতুটির বাজারে লক্ষণীয় উদ্বৃত্ত তৈরি হতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল কপার স্টাডি গ্রুপের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কায় বাজারজুড়ে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম যেমন কমছে, তেমন চাহিদাও নিম্নমুখী। কিন্তু একই পরিস্থিতির কারণে ধাতুটির উত্তোলন গতি হারাচ্ছে। ফলে গত বছর যে পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী বছর ঘাটতি কেটে যাবে।

ইন্টারন্যাশনাল কপার স্টাডি গ্রুপ জানায়, চলতি বছর বিশ্ববাজারে লাখ ২৫ হাজার টন তামার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জের (এলএমই) গুদামগুলোয় আবারো কমতে শুরু করেছে তামার মজুদ। আটদিন ধরেই মজুদ নিম্নমুখী। চীন ধাতুটি ক্রয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়ায় মজুদে টান পড়েছে। এটি বৈশ্বিক ঘাটতির পেছনে বড় ভূমিকা পালন করছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে দেশটির নিট তামা আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। তবে আগামী বছর ঘাটতির পরিবর্তে বিশ্ববাজারে লাখ ৫৫ হাজার টনের উদ্বৃত্ত দেখা দিতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন