আবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন ৪৩ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপ্রধান

বণিক বার্তা অনলাইন

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন প্রেসিডেন্ট টিওডোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা এমবাসোগো। তিনি টানা ৪৩ বছর ধরে মধ্য আফ্রিকার দেশ ইকুয়েটোরিয়াল গিনির প্রেসিডেন্ট। এবার আবার দেশটির জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওবিয়াং এমন একটি ক্ষমতাকাঠামো তৈরি করেছেন, যেখানে গুম, খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের রাজত্ব চলছে। আসন্ন নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে কয়েকজন প্রার্থী দাঁড়ালেও তাদের জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই। নিজের পরিবারের সদস্যদের ক্ষমতার বিভিন্ন স্তরে বসিয়ে তিনি রীতিমতো একটি শক্ত ঘাঁটি তৈরি করে নিয়েছেন। যেখান থেকে তাকে হটানো অসম্ভবের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। 

লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি এবং আফ্রিকান শাসনব্যবস্থার অধ্যাপক আনা লুসিয়া সা বিবিসিকে বলেছেন, এসব নির্বাচন শুধুই লোকদেখানো। এর ফলে কিছুই বদলাবে না। সাবেক প্রেসিডেন্ট এবারো অন্তত ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হবেন। 

সামাজিক অ্যাকটিভিস্টদের বরাতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে,  ইকুয়েটোরিয়াল গিনিতে মানুষের ভোটের স্বাধীনতা নেই। দেশটির সব গণমাধ্যমই সরকার এবং তার সহযোগী গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণে। ক্ষমতা ধরে রাখতে যা যা করা দরকার, বর্তমান প্রেসিডেন্ট তার সবই করে যাচ্ছেন।

এর আগে বেশ কয়েকবার মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল প্রেসিডেন্ট ওবিয়াংয়ের বিরুদ্ধে। এখন তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের চরিত্রের কালিমা মোছার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি বাতিল করে দেন তিনি। তার এ উদ্যোগ জাতিসংঘের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। 

শাসনক্ষমতায় থাকার অস্ত্র হিসেবে তিনি বেশকিছু ধারণাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন। এর একটি দারিদ্র্য। বিবিসি বলছে, রাজনীতির খেলায় ক্ষমতার ভিত্তি পাকাপোক্ত করতে তিনি দারিদ্র্যকে ঘুটি হিসেবে ব্যবহার করেন। সম্প্রতি তিনি এর মাধ্যমে বেশকয়েকটি আন্দোলনকে কবজায় আনতে সক্ষম হন বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি। 

১৯৭৯ সালে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি তার নিজের স্বৈরশাসক চাচার কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেন। তার চাচা ফ্রান্সিসকো ম্যাকিয়াস এনগুইমার আমলে হাজার হাজার মানুষের হত্যা এবং ব্যাপকহারে মানুষের উদ্বাস্তু হয়ে দেশত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল। অবশ্য পরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কিন্তু ওবিয়াং ক্ষমতা নেয়ার পর তার চাচার মতোই স্বৈরাচার হয়ে ওঠেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন