সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

ব্যাংক ছাড়া সব খাতে ইতিবাচক রিটার্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সার্বিকভাবে ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সময়ে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব সূচকের পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে কেবল ব্যাংক ছাড়া সব খাতে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গত সপ্তাহে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, চেক নগদায়ন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নতুন নির্দেশনা গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। এর বাইরে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে ভালো রিটার্নের প্রত্যাশায় বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এসব কারণে গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের সঙ্গে বিএসইসির আসন্ন বৈঠক নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা, আগামী সপ্তাহে যার প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান হাজার ৪১১ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে। সূচকের উত্থানে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনেক্স ইনফোসিস, বসুন্ধরা পেপার মিলস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এডিএন টেলিকম   ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারের।

তবে গত সপ্তাহে ডিএসইর অন্য সূচকগুলো কমেছে। এর মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ কমে হাজার ২৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ২৬৬ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ কমে হাজার ৪০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৪০২ পয়েন্টে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৯৮টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২১টির, কমেছে ৪৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২২টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ৯টির।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে হাজার ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৫৮৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক্সচেঞ্জটিতে সাপ্তাহিক লেনদেন বেড়েছে হাজার ৮৮৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার বেশি বা ৫২ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল হাজার ৯৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৭১৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে রয়েছে বিবিধ খাত। এক্সচেঞ্জটির মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক শতাংশই রয়েছে খাতটির দখলে। ১৫ দশমিক শতাংশ লেনদেন নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। খাতের দখলে মোট লেনদেনের ১১ দশমিক শতাংশ রয়েছে। ১১ দশমিক শতাংশ লেনদেন নিয়ে তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে কাগজ মুদ্রণ খাত। পরের অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের দখলে রয়েছে মোট লেনদেনের ১১ দশমিক শতাংশ। এছাড়া সাধারণ বীমা, বিদ্যুৎ জ্বালানি এবং ভ্রমণ অবকাশ খাতের দখলে গত সপ্তাহে যথাক্রমে দশমিক , দশমিক দশমিক শতাংশ লেনদেন রয়েছে।

গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে কেবল ব্যাংক খাতে দশমিক শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন ছাড়া সব খাতেই ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। সময়ে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে, ১৫ দশমিক শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে ভ্রমণ অবকাশ খাতে। দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্নের ভিত্তিতে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সেবা আবাসন খাত। পরের অবস্থানে থাকা কাগজ মুদ্রণ খাতে গত সপ্তাহে দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। পঞ্চম অবস্থানে থাকা জীবন বীমা খাতে গত সপ্তাহে দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এছাড়া সাধরণ বীমা সিরামিক খাতে গত সপ্তাহে যথাক্রমে দশমিক শতাংশ দশমিক শতাংশ হারে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে।

গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে লাখ ৭৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকায়। যেখানে সপ্তাহের শুরুতে বাজার মূলধন ছিল লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ কোটি ৭২ লাখ টাকায়। সে হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার ৮৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা বা দশমিক ৬৩ শতাংশ।

অন্যদিকে সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ৮৮ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার ৯৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৮ হাজার ৭৮০ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে ৮৮ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে। সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ১৫৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে যেখানে লেনদেন হয়েছিল ৯২ কোটি ২০ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২২টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৬টির, কমেছে ৩৮টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬৮টির।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন