প্রযুক্তি জায়ান্টদের শিথিলতা

দক্ষ ও মেধাবীদের নিয়োগে এগিয়ে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান

বণিক বার্তা ডেস্ক

অর্থনৈতিক মন্দা, মূল্যস্ফীতিসহ বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে খরচ নিয়ন্ত্রণে বড় বড় প্রতিষ্ঠান কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ছোট বা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই মেধাবী যোগ্য কর্মী খুঁজে নিতে পারছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার অভিজ্ঞ ম্যানেজারদের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করতে পারছে। খবর রয়টার্স।

বাজারে ছোট ছোট বা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন পণ্য থেকে আয় কম হলেও মেধাবী দক্ষ কর্মীদের বাগিয়ে নিতে আকর্ষণীয় বেতন কাঠামোর ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। অর্থনৈতিক দুরবস্থা না থাকলে এসব কর্মী হয়তো মাইক্রোসফট করপোরেশন বা ফেসবুকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটার অধীনে কাজ করতেন।

কোডিং প্লাটফর্ম স্ট্যাক ওভারফ্লোর প্রধান নির্বাহী প্রশান্ত চন্দ্রশেখর বলেন, চলতি বছর তাদের কর্মী সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ৫৪০- পৌঁছেছে। এসব কর্মীর মধ্যে অনেকেই অ্যালফাবেটের গুগল অ্যাপল থেকে এসেছে। প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মী সংখ্যা কমানোর উদ্যোগ নিলে সেখানে থাকা দক্ষ কর্মীরা অন্য জায়গায় কর্মসংস্থানের সুযোগ খুঁজবেন। কেননা তখন বিদ্যমান কর্মক্ষেত্রে স্থায়িত্বের বিষয়টি তাদের মনে সন্দেহ তৈরি করবে।

ক্রেডিট কার্ড পরিষেবায় স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান এক্সওয়ান কার্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জানান, এক বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মীর সংখ্যর দ্বিগুণ বেড়ে ৩৫- উন্নীত হয়েছে। সেই সঙ্গে সামনের মাসগুলোতে বড় প্রতিষ্ঠান থেকে অনেকেই এখানে যোগদান করবে। বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও গুগল, অ্যাপল, মাইক্রোসফট মেটা কারো কাছ থেকেই কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কয়েক দশক ধরে চলমান মূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের মূল্যের উত্থান-পতন থাকা সত্ত্বেও স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রেখেছে, যে কারণে বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

গ্লোবালডাটার তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর উত্থাপিত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিল এক-তৃতীয়াংশ কমে ১৪ হাজার ৬৩০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। নিয়োগ প্রতিষ্ঠান আনদিয়ামোর প্রধান নির্বাহী প্যাট্রিক ম্যাকঅ্যাডামস বলেন, ভিসি তহবিলের ওপর যেসব স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান নির্ভরশীল বর্তমানে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ অনেকটাই কমেছে। তবে বাজারে একাধিক পণ্য থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো আকর্ষণীয় বেতন-ভাতা দেয়ার অফার করছে।

ম্যাকঅ্যাডামস বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলো কৌশলগতভাবে তাদের নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল, যে কারণে বর্তমানে যখন প্রযুক্তি খাতে নিয়োগ শিথিল হয়ে আসছে তখন তারা দক্ষদের নিয়োগে এগিয়ে আসছে। গত বছরের একই সময়ে যা একেবারেই অসম্ভব ছিল। নিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডট টিম স্টার্টআপ কনসালট্যান্ট ম্যাসচ্যালেঞ্জের তথ্যানুযায়ী, ৫৮১ জন নির্বাহীকে নিয়ে যে জরিপ পরিচালিত হয়েছে সেখানে অধিকাংশই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তাদের প্রায় ৪০ শতাংশ ২০২২ সালের প্রথমার্ধে নিয়োগ কার্যক্রমের গতি বাড়িয়েছে।

নিয়োগকারীরা জানায়, প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়োগে সময়সীমা কমিয়ে আনার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক শ্রমবাজারে দক্ষদের আকৃষ্ট করার জন্য বেশি বেতন-ভাতা প্যাকেজ ঘোষণা করছে।

কিছু বিশেষজ্ঞের অভিমত, অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা যতদিন থাকবে ততদিন পর্যন্ত স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিয়োগ চালিয়ে যেতে পারবে। মুডি অ্যানালিটিকসের অর্থনৈতিক গবেষণা বিভাগের পরিচালক দান্তে ডি অ্যান্টোনিও বলেন, অর্থনীতি যদি সত্যিই মন্দার দিকে ধাবিত হয় তাহলে সেটি চাহিদা কমানোর পাশাপাশি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ তৈরি করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন