ছয় কার্যদিবস পর পুঁজিবাজারে নিম্নমুখিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর গতকাল নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সব সূচক লেনদেন কমেছে। মূলত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা দেখা গিয়েছে এদিন। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর প্রথম ১২ মিনিট পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। এরপর সূচকটি নিম্নমুখী হতে থাকে। দিন শেষে ৩৫ পয়েন্ট কমে হাজার ২৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ৩১৬ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ২২ পয়েন্ট কমে হাজার ২৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ২৬৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে পয়েন্ট কমে হাজার ৩৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৩৮৮ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, জিপিএইচ ইস্পাত ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারের।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ১৩৩ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল আগের কার্যদিবসের চেয়ে ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৭১টির, কমেছে ২১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৯৪টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচেষ্টা সরকারের বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় বাজারে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের ঘোষণা গত ছয় কার্যদিবস পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। তবে হঠাৎ করেই সরকারি অফিস ব্যাংকগুলোর কাজের সময়ে পরিবর্তন গতকাল বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। পাশাপাশি ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তারিক আমিন ভূঁইয়ার পদত্যাগ আরো দুশ্চিন্তায় ফেলেছে তাদের। এসব কারণে গতকাল আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করার প্রবণতা দেখা গিয়েছে।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে সেবা আবাসন খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল পাট খাতে, দশমিক শতাংশ।

অন্যদিকে সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৪০ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৮৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ১২৮ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৬৭ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৫৭১ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৮৭টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৫টির, কমেছে ১৩৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৫টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ২৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৩ কোটি লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন