পুঁজিবাজারে সরকারি বন্ড লেনদেনের বাধা কাটল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সরকারি সিকিউরিটিজ তালিকাভুক্ত থাকলেও বিভিন্ন জটিলতার কারণে এতদিন এগুলোর লেনদেন বন্ধ ছিল। এরই মধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বেশকিছু সরকারি সিকিউরিটিজের। অবস্থায় পুঁজিবাজারে বন্ডের লেনদেনের মাধ্যমে একটি কার্যকর বন্ড মার্কেট গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) লক্ষ্যে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক, দুই স্টক এক্সচেঞ্জ সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বিএসইসি। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেনে দীর্ঘদিনের বাধা কাটল।

গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকে উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট  প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়।

এমওইউ স্বাক্ষরের ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা স্টক ব্রোকারের মাধ্যমে বিওআইডি ব্যবহার করে সরকারি সিকিউরিটিজ কেনাবেচা করতে পারবেন। পুঁজিবাজারে লেনদেনকৃত সরকারি সিকিউরিটিজের অভিহিত মূল্য হবে ১০০ কোটি টাকা। মার্কেট লট নির্ধারণ করা হয়েছে হাজার। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা স্টক এক্সচেঞ্জের প্লাটফর্মে ন্যূনতম লাখ টাকার সরকারি সিকিউরিটিজ লেনদেন করতে পারবেন। বিনিয়োগকারীরা ইল্ড কিংবা দর উল্লেখ করে সরকারি সিকিউরিটিজ কেনাবেচা করতে পারবেন। বিক্রেতা বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে পুঞ্জীভূত সুদ বা মুনাফা পাবেন। অন্যদিকে ক্রেতা বা বন্ডহোল্ডারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কুপন ডেটে কুপনের অর্থ বিইএফটিএনের মাধ্যমে জমা হবে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেডিং প্লাটফর্মে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেনের কারণে বিভিন্ন মেয়াদের বন্ডের ইল্ড কার্ব পাওয়া যাবে। ইল্ড কার্বের ভিত্তিতে অন্যান্য বন্ডে কুপন বা সুদহার কিংবা লভ্যাংশ নির্ধারণ করা সহজ হবে। পাশাপাশি ইল্ড কার্বের ভিত্তিতে বিভিন্ন মেয়াদের বন্ডের ভবিষ্যৎ সুদহার বা লভ্যাংশ প্রাক্কলন করাও সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, পুঁজিবাজার মুদ্রাবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সম্মিলিতভাবে কাজ করলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রবৃদ্ধির আরো উন্নতি হবে। আজকের যৌথ পদক্ষেপ দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার একত্রে কাজ করার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সরকারি সিকিউরিটিজের সেকেন্ডারি লেনদেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্লাটফর্মে করার মাধ্যমে দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে উঠবে পুঁজিবাজারের বাজার মূলধন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। একটি গতিশীল বন্ড মার্কেট গড়ে উঠলে ব্যাংকঋণের ওপর নির্ভরতা কমে আসার পাশাপাশি খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমবে। বর্তমানে জিডিপির অনুপাতে বাজার মূলধন ১৬ শতাংশকে দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক বিএসইসি ভবিষ্যতেও একসঙ্গে সমন্বয় পরস্পর সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে যাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বলেন, বর্তমানে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে এমওইউ স্বাক্ষরের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের সেকেন্ডারি লেনদেনের সুযোগ তৈরি হবে। এতে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন