আন্তর্জাতিক পণ্যবাজারে উত্থান-পতনে বছর শুরু

বণিক বার্তা ডেস্ক

উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে বছর শুরু করেছে আন্তর্জাতিক পণ্যবাজার। একদিকে যেমন রয়েছে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া আরো জোরদার হওয়ার আশা, ঠিক তেমনি কভিড-১৯ মহামারীর নতুন ঢেউ জন্ম দিয়েছে উদ্বেগ উত্কণ্ঠার। বাজার পরিস্থিতি যখন সম্ভাবনা আশঙ্কার মাঝামাঝি পর্যায়ে আটকে আছে, তখন নির্দিষ্ট কিছু পণ্য ভিন্ন পথে এগোচ্ছে। বছরের প্রথম কয়েক দিনের বাণিজ্যে এসব পণ্যের একটির ওপর অন্যটির ব্যাপক নির্ভরশীলতা লক্ষ করা গিয়েছে।

তথ্য বলছে, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের মিত্র জোট ওপেক প্লাস চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক চার লাখ ব্যারেল করে উত্তোলন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর পরও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ৮০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওপেক প্লাসের উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অটল থাকার ঘোষণায় জ্বালানি তেলের দাম কমার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ঘটছে তার উল্টো ঘটনা। কারণ সরবরাহের চেয়ে চাহিদা বৃদ্ধির হার বেশি। তার ওপর জোটভুক্ত অনেক দেশ বেঁধে দেয়া কোটা অনুযায়ী জ্বালানি তেল উত্তোলনে ব্যর্থ হচ্ছে। এটিও মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

চলতি বছর কোনো সন্দেহ ছাড়াই বলা যায়, জ্বালানি তেলের বাজার পরিস্থিতি উদ্বৃত্তের পথে হাঁটছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, চাহিদা প্রত্যাশা কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে, অথবা ওমিক্রন প্রত্যাশায় নতুন করে বাধার সৃষ্টি করবে কিনা। আগামী ফেব্রুয়ারি ওপেক প্লাসের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আসন্ন মাসগুলোয় উত্তোলন বাড়বে নাকি কমবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্তের ওপর জ্বালানি পণ্যের বাজার ওঠানামা নির্ভর করছে।

এদিকে ২০২১ সালে স্বর্ণের দাম ছিল আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ কম। তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পণ্যটির বাজার ছিল নিম্নমুখী। বিনিয়োগ চাহিদা কমে যাওয়া এতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। নতুন বছরেও ধাতুটির বাজারে প্রতিকূলতা অব্যাহত থাকবে। প্রতি ট্রয় আউন্সের দাম হাজার ৮০০ ডলারের গণ্ডি ছুঁতে পারবে না বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিনিয়োগ চাহিদা বাড়ার আগ পর্যন্ত অব্যাহত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে খাতসংশ্লিষ্টদের।

অন্যদিকে সংকুচিত সরবরাহ ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা ধাতব পণ্যের বাজারে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। চলতি সপ্তাহে দস্তার দাম শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে হাজার ৬০০ ডলারে। এছাড়া একই সময় অ্যালুমিনিয়ামের দাম শতাংশ বেড়ে প্রতি টনের দাম হাজার ৮৪০ ডলারে পৌঁছেছে।

জ্বালানি পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে ইউরোপের নীতিনির্ধারকরা অ্যালুমিনিয়াম দস্তা উৎপাদন কমিয়ে আনতে কোম্পানিগুলোকে চাপ দিচ্ছে। ফলে এসব পণ্য সরবরাহ নতুন করে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জের (এলএমই) মজুদাগারগুলোয়ও এসব পণ্যের মজুদ কমছে। সরবরাহ চাহিদার ভারসাম্যহীনতায় বছরের শুরুতে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে তামা ইস্পাতের বাজারও।

বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব কাটছে প্রধান প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদক দেশে। ফলে খাদ্যশস্যের দাম নিম্নমুখী হয়ে উঠছে। কমতির দিকে রয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি কফির দামও।      সূত্র: দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন