এলজিইডির সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাইল ছবি

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মজিবুর রহমান সিকদারের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২০ মে) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) উপপরিচালক জেসমিন আক্তার মামলাটি দায়ের করেন।

এজাহারে অভিযোগ আনা হয়, কামরুন নাহারের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদকে বৈধ করার পূর্বপরিকল্পনায় মৎস্য আয়ের সমর্থনে ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করেছেন। তিনি সম্পদ বিবরণীতে ৯৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা গোপনসহ মোট ৬ কোটি ৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার সম্পদ ভোগদখল রাখা সত্ত্বেও সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দিয়েছেন। যা দুদক আইন, ২০০৪, এর ২৬ (২) এবং ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

তিনি ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর ৫ কোটি ৫৬ লাখ ২৮ হাজার টাকার সম্পদের হিসাব কমিশনে দাখিল করেন। তার আয়কর বিবরণী, লিখিত রেকর্ডপত্র ও বক্তব্য অনুযায়ী তিনি ২০০১-২০০২ করবর্ষ থেকে ২০২০-২১ করবর্ষ পর্যন্ত মোট ৬ কোটি ৭৪ লাখ আট হাজার টাকা আয় করেন। এর মধ্যে মৎস্য খাত থেকে ৩ কোটি ৮২ লাখ ২৯ হাজার টাকা আয় দেখান। কিন্তু মৎস্য খাতে কত টাকা ব্যয় করেছেন তার কোনো হিসাব তিনি দেখাতে পারেননি। খুলনার তেরখাদা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দফতরের অভিমতের সমর্থনেও বিনিয়োগ সংক্রান্ত যৌক্তিক ব্যাখ্যা বা প্রমাণাদি পেশ করতে পারেননি।

মৎস্য আয়ের সমর্থনে চুক্তিতে ব্যবহৃত স্ট্যাম্পগুলো যাচাই করা হয়। কামরুন নাহার অবৈধ আয়কে বৈধ করার পূর্ব পরিকল্পনায় ২০২২ সালের স্ট্যাম্প ব্যবহার করে জালিয়াতির আশ্রয়ে যথাক্রমে ২০০২, ২০০৭ এবং ২০১২ সালের বৈধ করার অপপ্রয়াসে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন চুক্তিপত্র বা রেকর্ডপত্র তৈরি করেন।

আয়কর নথিতে ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যবসা থেকে আয় প্রদর্শন করেন। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোথায়, ট্রেড লাইসেন্স, ব্যবসার ধরন, মালামাল ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত রশিদ বহি, নিকাশ বহি এবং কোনো ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করতে পারেননি। দুদকের অনুসন্ধান শুরু হলে অবৈধ আয়কে বৈধ করার লক্ষ্যে আয়কর নথি খোলার ২০ বছর পর আয়কর অধ্যাদেশ ১৯ এর সুবিধা নিয়ে অবৈধ আয়কে বৈধ করেন। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আয়কর অধ্যাদেশের ধারা ১৯ অনুযায়ী সংশোধিত রিটার্নে প্রদর্শিত ৫ কোটি ২৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত।

গত ১৪ মে মজিবুর রহমান সিকদারের নামেও একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়, তিনি মৎস্য আয়ের সমর্থনে ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকা গোপন করেন। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার টাকার সম্পদ ভোগদখলে রেখেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন