পটিয়ার হাবিলাসদ্বীপে পানি সংকট

আদালতের রায় বাস্তবায়নে বেলার গণশুনানি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নে শিল্প-কারখানার কারণে পানি সংকট তীব্রতর হয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালে আদালত শিল্প-কারখানায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন বন্ধ করে পরিবেশ বিপর্যয় রোধের নির্দেশনা দেন। আদালতের রায়ের পরও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা শিল্প মালিকরা রায় বাস্তবায়ন করেনি। এখন প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় জনগণ।

গতকাল বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গণশুনানির আয়োজন করে। হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের ভুক্তভোগী বাসিন্দা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা গণশুনানিতে অংশ নেন।

বেলার প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা পরিবেশ দূষণ পানি সংকটের জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর উদাসীনতাকে দায়ী করেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান শাহ আমানত নিটিং অ্যান্ড ডায়িংয়ের ব্যবস্থাপক সরওয়ার আলম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, কারখানার অভ্যন্তরে চারটি পুকুর থেকে পানি নিয়ে কারখানা পরিচালনা করা হয়। তাছাড়া ইটিপি চালু রাখার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য ৩২টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

গণশুনানিতে উপস্থিত হয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক সেলিনা আকতার বলেন, হাবিলাসদ্বীপ এলাকায় আটটি কারখানার মধ্যে পাঁচটি কারখানা বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া নিয়মিত অভিযান পরিচালনার সময় চালু থাকা কারখানা বনফুল, শাহ আমানত হাক্কানী পেপারের ইটিপি চালু পাওয়া যায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনের মেয়াদ থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তিনি।

গণশুনানিতে বেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা না হলে আদালতে আবেদনের মাধ্যমে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে দেয়া রায় বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, হাবিলাসদ্বীপ ইউনিয়নের শিল্প-কারখানার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা (মামলা নং-৪৪০) দায়ের করে বেলা। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত ১৩টি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ পানি সংকটের বিষয়ে স্থানীয় জনগণের পক্ষে রায় প্রদান করেন। যদিও এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত শিল্প মালিক সরকারি কোনো সংস্থাই রায় বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়নি বলে দাবি বেলা স্থানীয় জনগণের।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন