আরো ৬৭ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩০৫৭

বণিক বার্তা অনলাইন

তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশে অব্যাহতভাবে বাড়ছে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। রোগী শনাক্তের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। চলতি মাসের শুরুতে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। 

অন্যদিকে গত সাতদিনের হিসাব অনুযায়ী রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগে কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সাধারণত সংক্রমণ বাড়ার তিন সপ্তাহ পর বাড়তে শুরু করে মৃতের সংখ্যা। ফলে ঢাকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চলতি মাসের শেষে বা আগামী মাসের শুরুতে মৃত্যুহার বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন রোগতত্ত্ববিদরা।

আজ দেশে আরো ৬৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ৩ হাজার ৫৭ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ ধরা পড়ে। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৭জনে। আর মারা গেছেন ১৩ হাজার ৪৬৬ জন করোনা রোগী। সর্বশেষ ১ হাজার ৭২৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাদের নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ১৪৬ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫২৮টি পরীক্ষাগারে ১৬ হাজার ৯৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে মোট ৬৩ লাখ ৫ হাজার ৫০৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ০২ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ০০ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৬৭ জনের মধ্যে খুলনা বিভাগেরই ২৪ জন। এছাড়া, ঢাকায় ১৪, চট্টগ্রামে ১১, রাজশাহীতে ৮, সিলেটে ১, রংপুরে ৮ এবং ময়মনসিংহে ১ জন মারা গেছেন।

এ সময়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ এবং ৩৩ জন নারী। এদের মধ্যে মাত্র ১ জন বাসায় মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়া ১৩ হাজার ৪৬৬ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৬৫৭ জন এবং নারী ৩ হাজার ৮০৯ জন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৭ জনেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২২, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১২, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের ৩ জন রয়েছেন।

চলতি বছরের মার্চে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে গত ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল রয়েছে। দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ৩১ মে করোনা রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৬২৬ জন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে গত ১১ জুন মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার অতিক্রম করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণের মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল দৈনিক হিসেবে সর্বোচ্চ ১১২ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন