গারো পাহাড়ে তরমুজ চাষে সাফল্য

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, শেরপুর

শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ি এলাকায় সম্প্রতি মাল্টা চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেন আব্দুল বাতেন। তবে এবার পাহাড়ি জমিতে তিনি তরমুজের চাষ করেছেন। চরাঞ্চলের ফসল হলেও তরমুজ চাষেও তিনি সমান সফলতা পেয়েছেন। পাহাড়ে তার আবাদ করা তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। তার সফলতায় অঞ্চলের অন্যান্য কৃষকও তরমুজ চাষে উৎসাহিত হবেন বলে প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, আব্দুল বাতেন তার মাল্টা বাগানের ভেতর মোট এক একর জমিতে এবার প্রথম বাণিজ্যিকভাবে প্রায় দুই হাজার তরমুজের বীজ বপন করেন। তিনি গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজের আবাদ করেন। এতে সাফল্য অর্জন করায় এবার বাণিজ্যিকভাবে তরমুজের আবাদ করেছেন।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তরমুজ চরাঞ্চলের ফল। চরের মাটি আবহাওয়া তরমুজের আবাদের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু পাহাড়ি মাটিতে এর ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে পর্যাপ্ত পরিচর্যা কৃষি বিভাগের পরামর্শে পাহাড়ে তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন আব্দুল বাতেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, শেরপুর সীমান্তের গারো পাহাড়ি এলাকায় বেশির ভাগ স্থানে পানি শূন্যতার কারণে ধান চাষ হয় না বললেই চলে। যেসব স্থানে চাষ হয় সেখানেও প্রচুর পরিমাণে সেচ দিতে হয়। ফলে কৃষক ধানের আবাদ করে লোকসানেই থাকেন। এছাড়া কিছু স্থানে বিভিন্ন সবজির চাষ হলেও খরচ উঠে আসে না। আব্দুল বাতেন তার সফলতার মধ্য দিয়ে এলাকার মানুষের মাঝে তরমুজ চাষে আগ্রহী করে তুলেছেন। বাণিজ্যিকভাবেই এখানকার অনেক কৃষকই এখন তরমুজ চাষের কথা ভাবছেন।

আব্দুল বাতেন বলেন, আমাদের এলাকার পাহাড়ি মাটি বেলে-দোঁআশ প্রকৃতির হওয়ায় আমি গত বছর ১৫টি ট্রপিক্যাল ড্রাগন প্রজাতির তরমুজের চারা রোপণ করে সাফল্য পাওয়ায় এবার বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ করেছি। গতবার প্রতিটি তরমুজের ওজন ১৫-১৮ কেজি পর্যন্ত হয়েছিল। এবার আমার দুই হাজার গাছের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় লাখ টাকা। আশা করছি তরমুজ বিক্রি করে আয় হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, তরমুজের চারা বড় হয়ে ফলন আসা পর্যন্ত সামন্য পরিমাণে পানি দেয়া হয়েছে। পাহাড়ি মাটির নিচের অংশে পানি না থাকলেও উপরিভাগে পানির স্তর থাকায় সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়নি। তবে ফলন আসার সময় কিছুটা পানি পরিচর্যা করতে হয়েছে। এছাড়া মাল্টা বাগানের ভেতরেও বেশকিছু তরমুজ গাছ রোপণ করেছি।

স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ে সহজে তরমুজ আবাদ করা গেলে অঞ্চলের কৃষকরা উপকৃত হবেন। এখানে তরমুজের আবাদ বাড়লে কৃষকের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তরমুজের চাহিদাও পূরণ হবে। এক্ষেত্রে সরকারি প্রণোদনা, সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিকনির্দেশনা জরুরি। তারা বিষয়ে কৃষি বিভাগকে যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।

ব্যাপারে ঝিনাইগাতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আব্দুল বাতেন এবার তার মিশ্র ফল বাগানে এক একর জমিতে চরাঞ্চলের ফসল তরমুজ আবাদ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। আমরা তাকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন