বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের জুম থেকে ফসল সংগ্রহকালে ভালুকের আক্রমণে শিশুসহ দুইজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে চিম্বুক পাহাড়ের পাবলা হেডম্যান পাড়া এলাকায় একটি পাহাড়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো পাড়াটির কারবারি (পাড়া প্রধান) য়ংওয়াই ম্রো (৫০) ও তার নাতি মাংলিউ ম্রো (৪)।
আহত শিশুর মা তনলে ম্রো এ প্রতিবেদককে জানান, জুম থেকে ফসল সংগ্রহ করতে সকালে জুমে যান তারা। সেখানে পৌঁছার পর প্রতিবারের মতো তার ছেলে মাংলিউকে জুম ঘরে রেখে তারা স্বামী-স্ত্রী পেঁপে সংগ্রহ করতে যান। জুমের অপর প্রান্তে তার শ্বশুর কলার কাঁদি কাটতে যান। হঠাৎ ছেলের আর্তচিত্কার শুনতে সঙ্গে সঙ্গে সেদিকে ছুটে গেলে জুম ঘরের কাছাকাছি যেতেই একটি ভালুককে পালিয়ে যেতে দেখেন। এরপর তার সন্তানকে উদ্ধারের পর কাছাকাছি থাকা অন্য জুমিয়াদের ডাক দেন তারা। তারপর তার শ্বশুরকে কলাবাগানের নিচ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
পাড়াটি ৩০৯ নং দক্ষিণ হাঙ্গর মৌজাধীন। মৌজা হেডম্যান পারিং ম্রো এ পাড়ায় বসবাস করেন। তিনি বলেন, আহতদের চিকিত্সার জন্য বান্দরবান সদরে নিয়ে এসেছেন তিনি।
আহত কারবারির ছেলে লেংঙি ম্রো জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা সদরে পৌঁছে আহত বাবা ও ভাইপোকে প্রথমে বান্দরবান সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে কোনো চিকিত্সা মেলেনি। পরে সেখান থেকে ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।
এ সেন্টারে কর্তব্যরত চিকিত্সক গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. সাবরিনা বরকত বণিক বার্তাকে বলেন, শিশুর তুলনায় বয়স্ক ব্যক্তিটির অবস্থা গুরুতর। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তাছাড়া এ মেডিকেল সেন্টারে সার্জিক্যালসহ প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রের চিকিত্সক ও ব্যবস্থাও নেই। তাই বান্দরবান সামরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হয়।
বান্দরবান সামরিক হাসপাতালের অধিনায়ক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মেজর মো. সাইফুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ভালুকের আক্রমণে আহত ব্যক্তির চামড়াসহ মাথার খুলি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এছাড়া বাম চোখ নষ্ট ও চোয়ালের মাংস ছিড়ে গেছে। শিশুটির মাথা আঘাতপ্রাপ্ত ও পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়া হয়েছে। বান্দরবান সেনা রিজিয়ন আহতদের হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান তিনি।